Ultimate magazine theme for WordPress.

বাউফলে মুগডাল চাষিদের মাথায় হাত

0

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর বাউফলে মুগ গাছে ফল ছিদ্রকারী ল্যাদা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় অতিরিক্ত ফলন দেখে খুশিতে ছিলেন চাষিরা। কিন্তু শেষ লগ্নে ফল ছিদ্রকারী ওই ল্যাদা পোকার হানায় মুগডাল চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। ঔষধ প্রয়োগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না কৃষকরা। ফলে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা। পোকায় ডালের ছড়া কেটে ফেলায় জমিতে পড়েই নষ্ট হচ্ছে তা। কিভাবে পোকার হানা থেকে রেহাই মিলবে তা জানতে কৃষি দপ্তরেরও দ্বারস্থ হচ্ছেন অনেকে।

নাজিরপুর ইউনিয়নের ছোটডালিমা গ্রামের কৃষক সুলতান মাতুব্বর বলেন, ‘মুগ গাছের মাথার দিকে চাইলে কান্দন (কান্না) এ্যায়। গাছগুলা কি সুন্দর অইছে (হয়েছে), কিন্ত পোকে (পোকায়) সব খাইয়া হালাইছে (ফেলেছে)। ডাইল (ডাল) না পাকলে তুলমু ক্যামনে! কিন্তু য্যামনে (যেভাবে) পোকে ডাইলের ছড়া কাইট্রা(কাটে), হ্যাতে (তাতে) তো অনেক ক্ষতির মুখে পড়মু। কাডা (কাটা) ডাইল ক্ষ্যাত (জমি) থ্যাইক্কা (থেকে) তোলা সম্ভব না। স্যাষ (শেষ) সময়ে এমন সমস্যায় আমাগো (আমাদের) ঘুম নাই।’

তিনি আরো জানান, এক একর জমি চাষাবাদের জন্য ট্রাক্টর খরচ হয়েছে ৪ হাজার টাকা, রোপণের জন্য ১৫ কেজি ডাল কিনতে হয়েছে ১ হাজার ৮শ’ টাকা, পোকার আক্রমণ ঠেকাতে ঔষধ বাবদ খরচ করেছেন ১৪৮০ টাকা। সব মিলিয়ে একর প্রতি তাঁর খরচ হয়েছে ৭হাজার ২৮০ টাকা। একর প্রতি ৭/৮ মণ ডাল উৎপাদিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এ বছর ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণে ফলন কমে একর প্রতি ৩/৪ মনে নেমে আসতে পারে। আর তাতে বাজার মূল্য যা হবে তা থেকে উৎপাদন খরচ বাদ দিলে লাভের মুখ দেখা যাবে না। বরং ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।

একই গ্রামের আরেক কৃষক বজলু মৃধা বলেন, আমার দেড় একর জমির মুগডালের অধিকাংশই লম্বা-গোলাকার আকৃতির একধরনের পোকার উপদ্রবের কারণে নষ্ট হতে যাচ্ছে। কিভাবে সংসার চলবে সে চিন্তাতেই এখন ঘুম নাই।

পার্শ্ববর্তী গ্রামের কৃষক সফিক মুন্সি বলেন, আমার এক একর মুগডাল গাছের ৭৫ শতাংশই পোকার উপদ্রবে বিনষ্ট হয়েছে। ফলে দিশেহারা হয়ে মাথা হাত এখন প্রায় সব ডাল চাষিদেরই। এছাড়াাও তাদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগের কাজ ছিল কোনো এলাকায় ফসলে পোকার উপদ্রব হলে সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখা। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সেরকম কোনো ব্যবস্থা নেননি।

উপজেলা কৃষিকমৃকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন , এ বছর উপজেলায় ১৮ হাজার ৭৬২ হেক্টর জমিতে মুগ ডালের আবাদ করা হয়েছে। মুগ ডালের ফলন ভাল হলেও কিছু কিছু এলাকায় ফল ছিদ্রকারী পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে ডালের ছড়া ঝরে পড়ছে। ওই পোকার সংক্রমন বেশি হলে ফল বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদেকে কৃষি অফিসে যোগাযোগ করা জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।মাঠ পর্যায়ের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচন্ড রোধে এ ধরনের পোকা হানা দিয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.