Ultimate magazine theme for WordPress.

বাংলাদেশের শ্রমশক্তির ৪০ ভাগ কৃষিকাজে নিয়োজিত

কৃষি শুমারির প্রাথমিক রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন

0

কৃষিখবর প্রতিবেদক : বাংলাদেশের মোট শ্রমশক্তির ৪০ ভাগ কৃষিকাজে নিয়োজিত। জিডিপিতে বর্তমানে বৃহত্তর কৃষির সমন্বিত অবদান ১৩ দশমিক ৩১ ভাগ। আজ রবিবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর অডিটোরিয়ামে প্রকাশিত কৃষি শুমারি ২০১৯ এর প্রাথমিক রিপোর্টে এসব তথ্য জানানো হয়। কৃষি শুমারি ২০১৯ এর প্রাথমিক রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. রইছউল আলম মন্ডল, কৃষি সবিচ মো. নাসিরুজ্জামান, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মোড়ক উন্মোচনের আগে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় কৃষি শুমারির প্রাথমিক রিপোর্টের তথ্য তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক জাফর আহাম্মদ খান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কৃষিখাতে সঠিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাঘধ্যমে ক্রমহ্রাসমান কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কৃষিশুমারি ২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশে শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের কাঠামোগত পরিবর্তন ও পর্যায়ক্রমিক পরিসংখ্যান প্রস্তুত কৃষি শুমারির অন্যতম উদ্দেশ্য। এছাড়া ভুমির ব্যবহার, চাষযোগ্য জমির প্রকার ও ফসল বৈচিত্র্য, কৃষি উপকরণ, সেচ ও কৃষি যন্ত্রপাতি সম্পর্কিত পরিসখ্যান তৈরি করে কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন জরিপের জন্য নমুনায়ন কাঠামো প্রস্তুত ও মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষনের জন্য ভিত্তি উপাত্ত সরবরাহ করা হয়।

কৃষিশুমারি পরিচালনার মাধ্যমে কৃষিখানার সংখ্যা, খানার আকার, ভূমির ব্যবহার, কৃষির প্রকার, শস্যের ধরণ, চাষ পদ্ধতি, গবাদি পশু ও হাঁসÑমুরগীর সংখ্যা, মৎস্য উৎপাদন ও চাষাবাদ সংক্রান্ত তথ্যাদি এবং কৃষিক্ষেত্রে নিয়োজিত জনবল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। এ তথ্য উপাত্ত কৃষি ক্ষেত্রের উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে বেঞ্চমার্ক তথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

কৃষিশুমারি প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট সাধারণ খানার সংখ্যা ৩৫ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন। এরমধ্যে গ্রামীন খানা ২৯ দশমিক ৬২ মিলিয়ন এবং শহুরে খানা ৫ দশমিক ৯১ মিলিয়ন। শতকরা হিসেবে গ্রামীন খানা ৮৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর শহুরে খানা ১৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। দেশে সর্বোচ্চ সংখ্যক খানা রয়েছে ঢাকা বিভাগে ২৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এরপরে রয়েছে চট্টগ্রাম (১৭.৬২) এবং রাজশাহী (১৩.৫৭) বিভাগে।

এবারের কৃষি শুমারিতে প্রথমবারের মতো মৎস্যজীবী খানা অর্থাৎ উন্মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে এমন খানার সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১ মিলিয়ন বা ১০ লাখ মৎস্যজীবী রয়েছেন, যা মোট খানার ২.৮১ শতাংশ।

দেশের ২৫.৬২ শতাংশ খানার অন্তত একজন সদস্য কৃষি মজুরির উপর নির্ভরশীল। রংপুর বিভাগে সর্বোচ্চ ৪২.০৬% এরূপ খানা রয়েছে। এরপরেই রাজশাহী (৬৩.২৭%)ও খুলনা (৩৫.৮৪) বিভাগের অবস্থান। দেশের মোট খানার মধ্যে ৪.০৩ শতাংশের কোনো কৃষিজমি নেই। শহরের ৫.৯১ মিলিয়নের ১.৭০ মিলিয়ন অর্থাৎ ২৮.৭৯% সম্পূর্ণরূপে ভূমিহীন। অন্যদিকে গ্রামের ২.৩৩ মিলিয়ন অর্থাৎ ৭.৮৬% খানা সম্পূর্ণ ভূমিহীন।

বাংলাদেশের গ্রামীন অর্থনীতি তথা সমগ্র আয়ের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে কৃষি। কৃষির উপর নির্ভর করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি চলমান রয়েছে। এ কারণে জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে কৃষিখাতের অবদান গুরুত্বপূর্ণ।

কৃষিশুমারির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত সরকারের রূপকল্পনা ২০২১, নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮, টেশসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, পরিসংখ্যান উন্নয়নে জাতীয় কৌশলপত্র এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ণে সহায়তা করবে।

প্রসঙ্গত, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বিশ্ব খাদ্য ও কৃষিসংস্থার গাইডলাইন অনুসারে, সারা দেশের শহর ও পল্লী এলাকায় ‘কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি ২০১৮ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কৃষি শুমারি ২০১৯ পরিচালনা করছে।

এদেশে ১৯৬০ সালে প্রথম কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষি শুমারির ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩Ñ৮৪, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। দেশের অনুষ্ঠেয় পঞ্চমবারের মতো কৃষি শুমারি ২০১৯ এর তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ শুরু চলতি বছরের ৯ জুন। শেষ হয় ২০ জুন।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.