Ultimate magazine theme for WordPress.

কেআইবিতে চলছে খাদ্য মেলা

0

কৃষিখবর প্রতিবেদক : বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (কেআইবি) প্রাঙ্গনে চলছে তিন দিনব্যাপী খাদ্য মেলা। গতকাল বুধবার সকালে মেলার উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব আরিফুর রহমান অপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি ছিলেন এফএও বাংলাদেশ প্রতিনিধি মি. রবার্ট ডি. সিম্পসন। আয়োজিত সেমিনারে প্রতিপাদ্যের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন থাইল্যান্ডের মাহিডল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. ভিসিথ চাভাসিট।

এর আগে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী অন্যান্য অতিথিদের নিয়ে কেআইবি চত্বরে তিন দিনের খাদ্য মেলা উদ্বোধন করে স্টলগুলো ঘুরে দেখেন। সকালে বের হয় এবারের খাদ্য দিবসের বর্ণাঢ্য র‌্যালি। জাতীয় সংসদ ভবনের দ¶িণ প্লাজা থেকে শুরু হওয়া র‌্যালিটি মেলা প্রাঙ্গনে এসে শেষ হয়। মেলায় সরকারি ও বেসরকারি ৪৬ টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। মেলা প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশ পূর্ণাঙ্গ মধ্যম আয়ের দেশের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। খাদ্য উৎপাদন, সংগ্রহ ও বিপনন ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে জনগনের শতভাগ পুষ্টিমানের খাবার নিশ্চিত করে অচিরেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে।

কৃষিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অবদানের দীর্ঘ বর্ণনা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ আজ দানাদার খাদ্যে ¯^য়ংসম্পূর্ণ । অনেক ¶েত্রে উদ্বৃত্তও থাকছে। আমরা এ খাদ্য রপ্তানির জন্য বাজার খুঁজছি। এখন জনগনের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিমানের খাবার নিশ্চিতে সরকার প¶ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।

তিনি বলেন, শুধু আইন দিয়ে এবং সরকার চেষ্টা করলেই হবে না, নিরাপদ ও পুষ্টিমানের খাবার নিশ্চিতের জন্য দেশের জনগণকেও সচেতন হতে হবে। বলতে হবে, ভেজাল খাবো না-ভেজাল বিক্রি করতে দেবো না।

সম্প্রতি কৃষির সাফল্যর বিস্তারিত বিবরণে তিনি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি¶েত্রে অভাবনীয় উন্নতি করেছে। বিশ্বের বহু দেশের মানুষ বাংলাদেশের কৃষির এই অকল্পনীয় উন্নয়নের গল্প শুনতে আসেন। বাংলাদেশের কৃষি এখন বিশ্বের অন্যতম রোল মডেল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশে কখনো খাদ্য ঘাটতি ছিলো না। নীল চাষ গচিয়ে দেয়ায় ব্রিটিশ আমলে এ ভূখন্ডে খাদ্য ঘাটতি শুরু হয়। যা দেশ ¯^াধীন হওয়ার পরে বিগত সরকারগুলোর আমলেও বহাল ছিলো।

সাম্প্রতিক কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের উন্নয়নের সাফল্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব ¶েত্রে আমরা আরো অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বারবার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। দেশে মাছ ২শ টাকা কেজির নিচে নেই, পোল্ট্রি মুরগীর কেজি ১৩০-১৪০ টাকা।

গবাদি পশুর উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গ্রামে এমন কোনো বাড়ি পাবেন না, যেখানে একটিও গরু পাওয়া যাবে না। এসময় হঠাৎ করে দুধে সীসা আছে বলে প্রচার করা হলো। ধ্বস নামলো দুধের বাজারে। কৃষকের মাথায় হাত এবং খামারিরা পথে বসে গেলো। আমরা এগিয়ে যেতে চাইলেও আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ষড়যন্ত্র আমাদেরকে টেনে ধরার চেষ্টা করছে।

মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাজমা শাহীন, আইসিডিডিআরবির সিনিয়র পরিচালক ডা. তাহমিদ আহমেদ ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান। অনুষ্ঠানে ¯^াগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) এর নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. মো. কবির ইকরামুল হক। কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ বিভিন্ন সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ, আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, বিজ্ঞানী, গণমাধ্যমকর্মী প্রমুখ সেমিনারে অংশ নেন।

বিশ্ব খাদ্য দিবসের উদ্দেশ্য হল- ¶ুধা, অপুষ্টি ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা, কৃষির উন্নতিতে মনোযোগ দেওয়া, কৃষিভিত্তিক উৎপাদনে উৎসাহ দান করা, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত ¶েত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান, গ্রামীণ মানুষ, মূলতঃ মহিলা ও কম উন্নত মানুষদের অবদানে উৎসাহ দান, প্রযুক্তির সমৃদ্ধিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ছড়িয়ে দেওয়া।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.