মাহবুবা আকতার : চলছে আশ্বিন মাস। এই মাসে বাড়ন্ত আমন ধানের ক্ষেতের যত্ম নিতে হবে। পাশাপাশি যেসব নিচু জমির পানি নেমে গেছে সেখানে নাবি জাতের আমন ধানের চারা রোপন করার উপযুক্ত সময় এখন। অন্যদিকে আখ চাষীদের চারা উৎপাদনের উপযুক্ত সময় এই আশ্বিন মাস। শীতের সবজী, বিভিন্ন ধরনের কলাই চাষের জন্য এই সময়টি ভালোভাবে ব্যহার করতে হবে। মাছচাষীরা এই সময়ে পুকুরের যত্ম নেবেন। হাসÑমুরগীকে প্রতিষেধক টিকা দেয়ার উপযুক্ত সময় এখন। এছাড়া যারা ফলজ কিংবা অন্যান্য গাছ লাগিয়েছেন তাদের এই সময়ে গাছগুলোর প্রতি যত্মশীল হতে হবে। আশ্বিন মাসের কৃষি ও কৃষকদের করনীয় নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্বে আজ আমন ধানের ভালো ফলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হল।
এই আশ্বিনে আমন ধানের বাড়ন্ত পর্যায় চলছে। অনাকাক্সিক্ষত পোকাÑমাকড়ের আক্রমন থেকে আমন রক্ষায় ধানের জমিতে পার্চিং বা ডাল পুতে দিন। ধান গাছের বয়স ৪০-৫০ দিন হলে ইউরিয়ার শেষ কিস্তি প্রয়োগ করুন। সার প্রয়োগের আগে জমির আগাছা পরিষ্কার করে নিতে হবে এবং জমিতে ছিপছিপে পানি রাখতে হবে।
নিচু এলাকায় আশ্বিন মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত স্থানীয় উন্নত জাতের শাইল ধানের চারা রোপণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রতি গুছিতে ৫-৭টি চারা দিয়ে ঘন করে রোপণ করতে হবে। এ সময় বৃষ্টির অভাবে খরা দেখা দিতে পারে। এতে ফলন অনেক কমে যায়। সুতরাং খরা দেখা দিলে সম্পূরক সেচ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নদী, পুকুর, খাল-বিল, ডোবা যেখানেই পানি পাওয়া যাবে সেখান থেকে পাম্প, নলকূপ, দোন, সেঁওতি দিয়ে সেচ দেয়া নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, সম্পূরক সেচ আমনের ফলন বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
শিষ কাটা লেদাপোকা ধানের জমি আক্রমণ করতে পারে। প্রতি বর্গমিটার আমন জমিতে ২-৫টি লেদা পোকার উপস্থিতি মারাত্মক ক্ষতির পূর্বাভাস। তাই সতর্ক থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এ সময় মাজরা, পামরি, চুঙ্গি, গলমাছি পোকার আক্রমণ হতে পারে। এছাড়া খোলপড়া, পাতায় দাগপড়া রোগ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে নিয়মিত জমি পরিদর্শন করে, জমিতে খুঁটি দিয়ে, আলোর ফাঁদ পেতে, হাতজাল দিয়ে পোকা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাছাড়া সঠিক বালাইনাশক সঠিক মাত্রায়, সঠিক নিয়মে, সঠিক সময় শেষ কৌশল হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
শিষ কাটা লেদা পোকা ধানের জমি আক্রমণ করতে পারে। প্রতি বর্গমিটার আমন জমিতে ২-৫টি লেদা পোকার উপস্থিতি মারাত্মক ক্ষতির পূর্বাভাস। তাই সতর্ক থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
নাবি আমন রোপণ : কোন কারণে আমন সময় মতো চাষ করতে না পারলে আশ্বিনের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বিআর ২২, বিআর ২৩, বিনাশাইল বা স্থানীয় জাতের চারা রোপণ করা যায়। গুছিতে ৫-৭টি চারা রোপণ করতে হবে। অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে বেশি ইউরিয়া প্রয়োগ ও অতিরিক্ত পরিচর্যা নিশ্চিত করতে পারলে কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যায় এবং দেরির ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া যায়।
//এআরএইচ//
লেখক : উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, মেট্রোপলিটন কৃষি অফিস, উত্তরা, ঢাকা।
