Ultimate magazine theme for WordPress.

চিংড়িতে ভাইরাস সংক্রমণে বিপাকে মোংলার চাষিরা

0

খুলনা প্রতিনিধি : মোংলা বন্দর সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকার ঘেরগুলোতে ভাইরাস সংক্রমণে ব্যাপক হারে মারা যাচ্ছে চিংড়ি। এতে সাদা সোনা খ্যাত গলদা ও বাগদা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। দিশেহারা চাষিদের অভিযোগ, মৎস্য বিভাগ থেকে সঠিক পরামর্শ না পাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা মৎস্য বিভাগ বলছে, যে ঘেরে পাঁচ হাজার চিংড়ির পোনা লাগে, সেখানে ৫০ হাজার পোনা ছাড়েন চাষিরা। আর এ কারণেই এ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

মোংলা উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, প্রতিবছর দেশের দুই লাখ ৩০ হাজার ঘেরে একলাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন রফতানিযোগ্য গলদা ও বাগদা চিংড়ি উৎপাদন হয়। এর বেশিরভাগই মোংলা বন্দর সংলগ্ন এ উপকূলীয় এলাকার চিংড়ি ঘেরগুলো থেকে উৎপাদিত হয়। কিন্তু ভাইরাসসহ নানা রোগে এখন এ এলাকার ঘেরের চিংড়ি মরে যাচ্ছে।

চাষিদের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, ভাইরাসের সংক্রমণে অনেকের ঘেরের চিংড়ি মরে গেছে। পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। এ অবস্থার জন্য মৎস্য বিভাগ থেকে সঠিক পরামর্শ না পাওয়ার অভিযোগ করেন তারা।

উপজেলার চিলা ইউনিয়নের চাষি হরিপদ মন্ডল বলেন, ‘ভাইরাসে বারবার আমরা মার খাচ্ছি; ধ্বংসের পথে। কিন্তু এপর্যন্ত উপজেলা মৎস্য বিভাগ থেকে কোনও সহযোগিতা পাইনি, এমনকি পরামর্শ পর্যন্ত না।’

বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের আরেক চাষি শেখর মন্ডল বলেন, ‘ব্যাংক থেকে লাখ লাখ টাকা লগ্নি করেছিলাম। পুঁজি হারিয়েছি। ভাইরাসে ঘেরের সব চিংড়ি মরে গেছে। এখন ব্যাংকের টাকা কীভাবে শোধ করবো, বুঝতে পারছি না। ভাইরাস যতদিন ধ্বংস না হবে, লাভের আশা আর করছি না।’

মোংলা বাজারের চিংড়ি আড়তদার মো. মোসলেম মিয়া ও শাজাহান ফকির জানান, তারা প্রতিবছর চাষিদের কয়েক লাখ টাকা দাদন (অগ্রিম) দিয়ে চিংড়ি চাষ করান। কিন্তু ভাইরাসের সংক্রমণে এবার সব চিংড়ি মরে গেছে।

ভাইরাস সংক্রমণ ও চিংড়ি মরার পেছনে চাষিদের ‘অপরিকল্পিতভাবে চাষ’কে দায়ী করে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এ জেড তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘ঘেরে অতিরিক্ত চিংড়ি চাষের জন্য ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে।’

এ ব্যাপারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. গাউছিয়াতু রেজা বানু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভাইরাস নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। দেখা গেছে, ঘেরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা সৃষ্টি হলে চিংড়িতে ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। ঘেরে কমপক্ষে তিন-পাঁচ ফুট গভীরতা দরকার। কিন্তু চিংড়ি চাষিরা এক-দেড় ফুট গভীরতার ঘের করেন। ফলে পানি গরম হয়ে ওঠে এবং চিংড়ি মারা যায়।’ ভাইরাস মোকাবিলায় চাষিদেরই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.