কৃষি প্রতিবেদক : উৎপাদন খরচের সঙ্গে শ্রমের মূল্য যোগ করে এবার ধানের দাম প্রতি মণ ১ হাজার ২০০ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে অর্থনীতি সমিতি। গতকাল শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০১৯-২০’ শীর্ষক প্রস্তাবনাটি উত্থাপন করেন অর্থনীতি সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত। আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ১২ লাখ ৪০ হাজার ৯০ কোটি টাকার বিকল্প বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন সমিতির সাধারণ স¤পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি বরাদ্দের চেয়ে বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে কৃষি, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, শিল্প ও অর্থনৈতিক সার্ভিস, জনশৃঙ্খলা-নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা খাতে।
কৃষি-ভ‚মি-জলা সংস্কার বিষয়ে আবুল বারকাত বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি ও কৃষক ভাবনার যথার্থতা বিচারে এক লাখ ভ‚মিহীন পরিবারের মধ্যে কমপক্ষে ২ লাখ বিঘা কৃষি খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়া সম্ভব, আর পাশাপাশি ২০ হাজার জলাহীন প্রকৃত মৎস্যজীবী পরিবারের মধ্যে কমপক্ষে ৫০ হাজার বিঘা খাস জলাশয় বন্দোবস্ত দেয়া সম্ভব।
এবার বোরো ধান প্রতি মণ ১ হাজার ৪০ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের। কিন্তু সরকারি কেনায় দেরি হওয়ায় ৫০০-৬০০ টাকায় দালালদের কাছে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন অনেক কৃষক। কৃষি ফসলের উৎপাদন অঞ্চল গঠন ও কৃষককে কৃষিপণ্যের ন্যায্য বাজারমূল্য দেয়ার প্রস্তাব করে বারকাত বলেন, এ বছর বোরো ধানে মণপ্রতি কৃষকের প্রকৃত লোকসান হবে কমপক্ষে ৫০০ টাকা। এবার বোরো ধান আবাদ করে উৎপাদন খরচ উঠছে না বলে কৃষকদের মধ্যে অসন্তোষ চলছে। মাঠের পাকা ধানে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
তিনি বলেন, এ নিয়ে সরকারের চিন্তিত হবার যথেষ্ট কারণ আছে। আমরা মনে করি কৃষককে তার উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে জরুরিভাবে কয়েকটি পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকারিভাবে সংগ্রহের ক্রয়মূল্য উৎপাদন খরচের তুলনায় কমপক্ষে ২০ শতাংশ বাড়াতে হবে, সেক্ষেত্রে এ বছরের বোরো ধানের মণপ্রতি বিক্রয়মূল্য হতে হবে কমপক্ষে ১২০০ টাকা।
তিনি বলেন, সরকারিভাবে সংগ্রহের ক্রয়মূল্য শুধু উৎপাদন খরচের তুলনায় কমপক্ষে ২০ শতাংশ বাড়ালেই হবে না। নিশ্চিত করতে হবে, প্রকৃত কৃষকই যেন ঝামেলা ছাড়াই ওই বাজারমূল্য পান।
কৃষকদের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা এবং কৃষিঋণ মওকুফের সুপারিশও করে তিনি বলেন, দেশকে খাদ্যে স্বয়সম্পূর্ণ রাখতে হলে একজন কৃষক যখন উৎপাদনে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন, তখন তার জন্য স্বল্পসুদে পারলে বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো কারণে ফসল মার খেলে বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে ফসল নষ্ট হয়ে গেলে, ওই ঋণ মওকুফ করে দিতে হবে।
//এআরএইচ//