ভোলা প্রতিনিধি : ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে জাটকা সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু বলেছেন, খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচনে এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে মৎস্য খাত অসামান্য অবদান রাখছে। জাতীয় মাছ ইলিশ বাঙালীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিতে মিশে আছে । দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আমিষ জাতীয় খাদ্য সরবরাহে এই মাছ অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে। তাই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধিতে জাটকা সংরক্ষণ করতে হবে। আজ শনিবার জেলার চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ মাছঘাটে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
‘কোন জাল ফেলবো না, জাটকা ইলিশ ধরবোনা’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. রইছউল আলম মন্ডল। অনুষ্ঠানে ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক উপ-মন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মো. রাশেদুল হক, ওয়ার্ল্ড ফিসের কান্ট্রি ডিরেক্টর ম্যলকন ডিকেন্স, নৌ পুলিশের ডিআইজি শেখ মুহাম্মদ মারুফ হাসান, জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক, পুলিশ সুপার মো. মোকতার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
পরে মৎস্য প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু ও সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব শতাধিক মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীতে সামরাজ ঘাট থেকে ভেতুয়া ঘাট পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য নৌ- র্যালিতে অংশ নেন।
এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় মাছ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি ও জনগণের সুলভপ্রাপ্তিতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে জাতীয় জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ-২০১৯ আজ থেকে শুরু হলো। আজ ১৬ মার্চ থেকে ২২ মার্চ পর্যন্ত দেশে এই সপ্তাহটি পালিত হবে।
আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন মৎস্য খাতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন করে তুলতে হবে। মাছ আমাদের দেশের সম্পদ। এর ফলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে। তাই নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে।
উল্লেখ্য, দেশের ইলিশ-অধ্যুষিত ৩৬টি জেলায় গত ১০ থেকে ১৬ মার্চ জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ পালনের সূচি নির্ধারিত থাকলেও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় অনিবার্য কারণে তা এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়।
মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু সাইদ মো. রাশেদুল হক জানান, সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে সংশ্লিষ্ট ৩৬টি জেলা-উপজেলায় সচেতনতামূলক ভিডিওচিত্র-প্রদর্শন, টিভি-রেডিও, মোবাইলে প্রচারণা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জাটকা সংরক্ষণ আইনের প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জাটকা সংরক্ষণের পাশাপাশি জালসহ জাটকা ক্রয়-বিক্রয়, বাজারজাতের বিরুদ্ধে ব্যাপক পুলিশি অভিযানসহ সংশ্লিষ্ট এলাকাতে ব্যাপকভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে বলেও জানান তিনি।
//এআরএইচ//