Ultimate magazine theme for WordPress.

খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে প্রয়োজন কৃষি যান্ত্রিকীকরণ : আতিউর

0


কৃষিখবর প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ের চেয়ে বর্তমানে খাদ্যশস্যের উৎপাদন প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতি বছর উৎপাদিত হচ্ছে ৩৮ মিলিয়ন টনেরও বেশি খাদ্যশস্য। বার্ষিক ৪ থেকে ৪.৫ শতাংশ হারে কৃষি প্রবৃদ্ধি হলে এ খাত থেকে রফতানি করে আয় করাও সম্ভব। এছাড়াও কৃষিখাতে কর্মীপ্রতি জিডিপি ১ শতাংশ বৃদ্ধি করা গেলে দারিদ্র্যতা কমবে ০.৩৯ শতাংশ। এসব কিছু আরও টেকসই করতে প্রয়োজন কৃষি যান্ত্রিকীকরণ। সম্প্রতি কৃষিবিদ মিলনায়তনে মেটাল গ্রুপ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ : বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ ও আর্থিক সেবাখাতের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এমিরেটাস ড. আব্দুস সাত্তার মন্ডলসহ বাংলাদেশের কৃষি বিজ্ঞানীরা। এছাড়াও ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক, রাষ্ট্রায়ত্ত, বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকের প্রতিনিধিসহ দেশি ও বিদেশি সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানের এবং বাংলাদেশে কর্মরত কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিবৃন্দ। উপস্থিত ছিলেন মেটালের গ্রুপ সিইও এএমএম ফরহাদ।

ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ সরকার কৃষির যান্ত্রিকীকরণের লক্ষ্যে প্রান্তিক ও দরিদ্র কৃষকদের যন্ত্রক্রয়ে ভর্তুকি প্রদান করছে। বেসরকারি খাতকে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদানের জন্য কৃষিযন্ত্র আমদানির ক্ষেত্রে রয়েছে বিশেষ শুল্ক সুবিধা।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে কৃষি যন্ত্রপাতি খাতে ঋণ প্রদানকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হয়েছে।

তিনি বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাকে অনুরোধ করেছেন কৃষকদের জন্য বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য, যেন তারা কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করতে পারে। তার মতে, এমনটি করা সম্ভব হলে সেটি হবে ‘পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ’- এর একটি আদর্শ দৃষ্টান্ত।

সেমিনারে মেটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সাদিদ জামিল বলেন, বাংলাদেশের কৃষিখাতকে যান্ত্রিকীকরণের জন্য মেটাল ১৯৯৩ সাল থেকে কাজ করে আসছে। মেটাল সর্বপ্রথম কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয় করার জন্য নিজ উদ্যোগে কৃষকদের ঋণ সুবিধা প্রদান করে। দেশের বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থনৈতিক সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানও কৃষকদের ঋণ সুবিধা প্রদানে এগিয়ে আসে তাহলে বাংলাদেশে কৃষির আধুনিকায়ন দ্রুত হবে। এর ফলে দেশের দারিদ্র্য কমে আসবে এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।

ভবিষ্যতে ব্যাংকিং খাতের কৃষির যান্ত্রিকীকরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখার প্রসঙ্গে ড. আতিউর রহমান তিনটি প্রস্তাবনা প্রদান করে তার বক্তব্য শেষ করেন। তিনি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ঋণের ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করতে ব্যাংক রেট ৫ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ নিয়ে আসতে বলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে মোট সরবরাহকৃত ঋণের অন্তত ১০ শতাংশ মৎস্যচাষে দেয়ার নির্দেশনা আসে। এমনটি কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ক্ষেত্রেও তিনি করতে বলেন। সর্বশেষ মসলা চাষি ও গাভি খামারিদের জন্য যেমন স্বল্পসুদে ঋণ দেয়া হয়েছিল তেমনটি কৃষির যান্ত্রিকীকরণেও করার জন্য প্রস্তাব দেন তিনি।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.