Ultimate magazine theme for WordPress.

ধানের দামে কৃষকের মাথায় হাত

0

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় আমন ধান কাটা শুরু করেছিলেন চাষিরা। কিন্তু সেই আনন্দে ভাটা পড়েছে ধানের দামে। বাজারে ধানের যে দাম তাতে লাভ তো দূরের কথা, উৎপাদন খরচই উঠছে না। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।

দেশে ধান উৎপাদনের অন্যতম জেলা ঠাকুরগাঁও। প্রতিবছরের মতো এবারো আগাম আমন কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। কিন্তু বাজারে তুলতেই মাথায় হাত। এবার আশাতীত ফলন পেলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। সরকারি গুদামে ১২০০ টাকা মণ দরে ধান কেনা হলেও বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়।

কৃষকরা বলছেন, বর্তমানে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়েছে কয়েক গুণ। চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ডিজেল, সার ও কীটনাশকের দাম থেকে শুরু করে শ্রমিকের মজুরি, প্রতিটি ক্ষেত্রেই খরচ বেড়েছে। এমন অবস্থায় ধানের দাম কম পাওয়ায় অসহায় অবস্থায় আছেন তারা।

সদর উপজেলার গড়েয়া বাজারে ধান বিক্রি করতে আসা সেরেকুল ইসলাম বলেন, ৮০০ টাকা মণ দরে ৩ মণ ধান বিক্রি করেছি ২ হাজার ৪০০ টাকায়। এই দামে হতাশ আমি। গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কম হলে হামরা বাঁচমু কী করে! ন্যায্য দামটুকু না পাওয়ায় এবারও ঋণ পরিশোধ হবে না।

কৃষকরা জানান, গত বোরো মৌসুমে এক বিঘা (৫০ শতাংশ) জমিতে উৎপাদন খরচ ছিল ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। এ বছর আমনে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা। এর মধ্যে ডিজেলের দাম বাড়ায় সেচ খরচ বেড়েছে বিঘাপ্রতি প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা। এছাড়া বীজ, সার ও কীটনাশক কিনতে হয়েছে চড়া দামে। শ্রমিকের মজুরি, মাড়াই ও পরিবহন খরচও বেড়েছে কয়েকগুণ।

কয়েক দফায় সবকিছুর দাম বাড়লেও ধানের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না কৃষকরা। ধান বিক্রি করতে হচ্ছে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম মূল্যে। জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কৃষক মিজানুর বলেন, ৫০ শতক জমিতে এবার খরচ পড়েছে ২৩ হাজার টাকা, আর ধান পেয়েছি ২৫ মণ। বাজারে কাঁচা ধান বিক্রি করেছি প্রতি মণ ৯০০ টাকা দরে ২২ হাজার ৫০০ টাকায়। সে হিসাবে আমার লোকসান হলো ৫০০ টাকা। যারা বর্গা নিয়ে জমি চাষ করেন তাদের এবার ঋণে ডুবতে হবে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৯১০ মেট্রিক টন, আর রোপা আমন ধান উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। আমন ধানের ফলন আশানুরূপ হয়েছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ শুরু হলে বাজারে ধানের দর বেড়ে যাবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.