Ultimate magazine theme for WordPress.

রাস্তার পাশে ৪০০ পেঁপে গাছ লাগিয়ে আলতাফের বাজিমাৎ

0

দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় রাস্তার পাশে বাণিজ্যিকভাবে পেঁপে চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক আলতাফ হোসেন। উপজেলার ৪ নং খামারপাড়া ইউনয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের রাস্তার ধারে আধা কিলোমিটার এলাকায় ৪০০ গাছ লাগিয়েছেন তিনি। এ গাছ লাগাতে তার খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। প্রথম বছরে ১ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন এই কৃষক।

জানা যায়, আলতাফ হোসেন ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের গুলজার রহমানের ছেলে। বাবা-ছেলে দুজনই কৃষক। কৃষি বিভাগের পরামর্শে বগুড়া থেকে থাইল্যান্ডের গ্রিন লেডি জাতের ৪০০ পেঁপে চারা এনে বাড়ির পাশের রাস্তার কিনারে লাগান। জমিদার নগর থেকে বরলাম বাজার যাওয়ার পথে কাঁচা রাস্তার দুই ধারে গাছে ঝুলে থাকা সবুজ পেঁপে দেখে প্রাণ জুড়িয়ে যায় পথচারীদের। গাছগুলো থেকে ১০ মণ পেঁপে সংগ্রহ করে ৮ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন তিনি। বাজারে আলুর দাম বেশি হওয়ায় পেঁপের চাহিদা বেড়ে গেছে। ভালো দামে পেঁপে বিক্রি করতে পারায় তিনি বেশ খুশি। প্রথম ধাপে প্রতি গাছ থেকে ৫-৭ কেজি করে পেঁপে সংগ্রহ করেছেন। গড়ে ১০ মণের বেশি পেঁপে বিক্রি করেছেন। বাজারে প্রতি মণ পেঁপে তিনি ৭০০-৮০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন।

কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের চাষ করি। এবার নতুন করে পেঁপে চাষ করার পরামর্শ দেন কৃষি অফিসার ইয়াসমিন আক্তার। তার কথামতো রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত জায়গার জঙ্গল পরিষ্কার করে পরীক্ষামূলকভাবে ৪০০ পেঁপে গাছ লাগাই। এ পর্যন্ত ১০ মণের বেশি পেঁপে বিক্রি করেছি। আগামীতে আমার জমি ও রাস্তা দুই ধারে বেশি করে পেঁপে চাষ করবো। খরচ বাদে এতে লাভ হবে ৮০ হাজার টাকা। কয়েক মৌসুমে এ গাছ থেকে পেঁপে পাওয়া যাবে।

ফারুক নামের এক পথচারী বলেন, ‘আমি এ পথ দিয়ে হাট-বাজারে যাওয়া-আসা করি। রাস্তাটি পাকা না হওয়ায় রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় জঙ্গল হয়। কৃষক আলতাফ হোসেন সেই জঙ্গল পরিষ্কার করে পেঁপে চাষ করেন। তিনি নিজে অনেক পরিশ্রম করেন। রাস্তার দুই ধারে সুন্দর পেঁপে গাছ লাগিয়ে রাস্তাটি সুন্দর করে তুলেছেন। রাস্তা দিয়ে যাওয়া-আসার সময় পেঁপে দেখে যে কোনো মানুষের দৃষ্টি জুড়িয়ে যাবে।’

ইউপি চেয়ারম্যান আবুবক্কর সিদ্দিক চৌধুরী বলেন, ‘আলতাফ হোসেন একজন স্মার্ট কৃষক। তিনি জানেন কখন কোন ফসল চাষ করতে হবে। এবার আলুর দাম বেশি হওয়ায় পেঁপের চাহিদা বেড়েছে। এই পেঁপে তিনি স্থানীয় বাজারেই বিক্রি করে থাকেন। এর আগেও তিনি কৃষিকাজের জন্য পুরস্কৃত হয়েছেন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘আলতাফ হোসেন সাড়ে ৩ মাস আগে গ্রিন লেডি পেঁপের চারা লাগিয়েছিলেন কৃষি বিভাগের পরামর্শে। বর্ষার মৌসুমে অন্য সবজি কম থাকায় পেঁপের চাহিদা বাড়ে। তিনি বিষয়টি মাথায় রেখে পেঁপে চাষ করেছেন। আশা রাখি তিনি পেঁপে চাষ করে ভালো লাভবান হবেন।’

আলতাফ হোসেন আদা চাষ করে ২০১৬ সালে দ্বাদশ সিটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা মেলায় বছরের ‘শ্রেষ্ঠ কৃষি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা’ হিসেবে রানারআপ হয়েছিলেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.