কৃষিখবর প্রতিবেদক : মৎস্য প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু জানিয়েছেন, আগামী ৯ অক্টোবর থেকে ২২ দিনের জন্য ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতে ইলিশ ধরা বন্ধ থাকবে। আজ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০১৯’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব বলেন। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছ উল আলম মণ্ডল উপস্থিত ছিলেন।
আশরাফ আলী খান খসরু বলেন, ‘পদ্মা, মেঘনা, ঊর্ধ্বাঞ্চল ও নিম্ন অববাহিকায় কালাবদর, আন্দারমানিক ও তেঁতুলিয়াসহ অন্যান্য উপকূলীয় নদীতে ৬টি ইলিশ অভয়াশ্রম স্থাপন ও অংশীদারিত্বমূলক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে। কারণ এখানেই ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য আসবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ২২ দিন উপকূলীয় ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রের আয়তায় ৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকাসহ দেশব্যাপী ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধ এই ২২ দিন স্থানীয় জেলা-উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী , বাংলাদেশ বিমান বাহিনী , বাংলাদেশে কোস্ট গার্ড, র্যা ব, পুলিশ, নৌ পুলিশ এবং মৎস্য অধিদফতর সম্মিলিতভাবে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা করবে। দেশের মোট ৩৬টি জেলায় সব নদ-নদীতে দিনে ও রাতে অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সারাদেশের মাছঘাট, আড়ৎ, হাটবাজার, চেইন শপ ও অন্যান্য বিক্রয় কেন্দ্রে ইলিশ ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন মজুত ও বিনিময় বন্ধে ব্যাপক অভিযান বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া ইলিশের প্রজননকালে অভিযান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মৎস্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট এলাকার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মৎস্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সাগর পাড়ে ল্যান্ডিং স্টেশনগুলোতে ৭০০ গ্রাম থেকে শুরু করে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের সাইজের কেজি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই দামেই খুশি জেলেরা। তবে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে এসব ইলিশ মাছের অত্যাধিক দামের ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগীরাই দায়ী। তাদের কারণে বাজারে ইলিশের দাম বাড়ে।’
ইলিশের জন্য সরকারের ঘোষণা করা মোট ছয়টি অভয়াশ্রম হচ্ছে—ভোলার চর ইলিশার মদনপুর থেকে চরপিয়াল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ৯০ কিলোমিটার, ভোলার ভেদুরিয়া থেকে চররুস্তম পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর ১০০ কিলোমিটার, পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আন্ধারমানিক নদীর ৪০ কিলোমিটার, চাঁদপুরের ষাটনল থেকে চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত মেঘনার ১০০ কিলোমিটার, শরীয়তপুরের নড়িয়া থেকে ভেদরগঞ্জ পর্যন্ত পদ্মার ২০ কিলোমিটার, বরিশাল সদরের কালাবদর নদীর হবিনগর পয়েন্ট থেকে মেহেন্দীগঞ্জের বামনীরচর পয়েন্ট পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার, মেহেন্দীগঞ্জের গজারিয়া নদীর হাটপয়েন্ট থেকে হিজলা লঞ্চঘাট পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এবং হিজলায় মেঘনার মৌলভীরহাট পয়েন্ট থেকে মেহেন্দীগঞ্জ সংলগ্ন মেঘনার দক্ষিণ-পশ্চিম জাঙ্গালিয়া পয়েন্ট পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার।
এছাড়া, আড়িয়াল খাঁ, নয়নভাঙগুলী ও কীর্তনখোলা নদীর আংশিক অভয়াশ্রমের অন্তর্ভুক্ত। বরিশালের আশপাশের ৮২ কিলোমিটার নদীপথ নিয়ে নতুন অভায়শ্রম ঘোষণা করেছে সরকার। এই ছয়টি অভয়াশ্রমের বাইরে দেশের উল্লেখযোগ্য নদীতে এ সময় কেবল ইলিশের ডিম ছাড়ার জন্য মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।
//এআরএইচ//