Ultimate magazine theme for WordPress.

দেবী দুর্গা আরাধনায় বাকুড়ার পদ্মফুল যাচ্ছে লন্ডনে

0

কৃষিখবর ডেস্ক : হিন্দু সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গা পুজায় দেবি দুর্গার সন্তুষ্টির জন্য ভারতের বাকুড়ার পদ্মফুল যাচ্ছে লন্ডনে। লন্ডনের হিন্দু সম্প্রদায় এই পদ্মফুল দিয়েই দেবীর আরাধনা করবেন। খবর সংবাদ প্রতিদিন।

কখনও তিনি মহামায়া, কখনও বা উমা। কখনও আবার মহিষাসুরমর্দিনী। এমনই বহু রূপে মর্ত্যে পূজিত হন দেবী দুর্গা। শরতে দেবীর অকাল বোধনের জন্য উৎসবের আরেক নাম শারদীয়া। পুরাণ মতে, দেবী দুর্গাকে সন্তুষ্ট করতে রামচন্দ্র ১০৮টি পদ্ম তাঁর পায়ে উৎসর্গ করেছিলেন।

হিন্দু শাস্ত্রমতে, ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে পূজা করলে দেবী প্রসন্ন হন। ফলে পদ্ম দিয়ে পূজার্চনা অবশ্য পালনীয়। শাস্ত্রের এই বিধান মেনে দেবীর ভক্তকুল সমস্ত বাধা পেরতে প্রস্তুত। আর ভক্তদের এই শ্রদ্ধায় বাণিজ্যে আশা দেখাচ্ছে বাঁকুড়ায় জলাশয়ে ভাসতে থাকা পদ্মফুল। রাঢ়ভূম থেকে পদ্মফুল সোজা পাড়ি দিচ্ছে বিলেতে। প্রবাসের মাটিতে দুর্গার আরাধনায় পদ্মের যোগান দিতে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে এই রাঢ়বঙ্গের বাঁকুড়া জেলার প্রান্তিক ফুল চাষিদের। তবে ওন্দা ব্লকের কল্যাণী গ্রামের বাসিন্দা রামপদ দাসের ব্যস্ততা আরও কিছুটা বেশি। কারণ, তাঁর পুকুরের কমলগুচ্ছই যে এবার সাত সমুদ্র তেরো

নদী পেরিয়ে যাচ্ছে সুদূর লন্ডনে। লালমাটির দেশে ফোটা এই পদ্মেই পূজিত হবেন প্রবাসের উমা! বিশ্বকর্মা পুজোর পরেই বিদেশে রপ্তানি করার জন্য ১৩ হাজার পদ্ম জোগান দিতে হবে তাঁকে। দেশে আর্থিক মন্দার মাঝে দশভুজার চরণে পদ্মফুল পাঠিয়ে প্রান্তিক চাষির লক্ষ্মীলাভের খবরে হইচই পড়ে গিয়েছে জেলাজুড়ে। রামপদ বাবুর সঙ্গে কথা বলতে বলতে জানা গেল, ফুলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক প্রায় তিন দশকের। অন্যের মাঠ লিজ নিয়ে গাঁদা, জবা–সহ হাজারও রঙবাহারি ফুল চাষ করে সংসার চলে তাঁর। সেইসঙ্গে রয়েছে লিজ নেওয়া প্রায় ৪০ বিঘা জলাশয়ে পদ্মচাষও। বহু বছর ধরে নিজে হাতে কমল ফুটিয়য়ে তা দেবীর আরাধনায় অর্পন করে আসছেন তিনি। রামপদ বাবুর কথায়, ‘দেশের মাটিতে পদ্ম বিক্রি হয় প্রতি পিস ২ থেকে ৩ টাকায়। দুর্গাপূজার সময় সেই দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৫ থেকে ৭ টাকা। তবে বিদেশে রপ্তানি করে দাম পাচ্ছি প্রতি পিসে ১০ থেকে ১২ টাকা।’

শুধু ওন্দা নয়, পদ্ম চাষ হয় এই জেলায় বিস্তীর্ণ এলাকায়। জেলাজুড়ে এখন শরতের দখিনা বাতাসে জলাশয়ে শুধু ভেসে বেড়াচ্ছে তেরঙা পদ্ম। পুকুরগুলিতে যেন আসন পেতে বসেছে গোলাপি, সাদা, হলুদ কমলকলি। জেলার উদ্যান পালন দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টর মলয় মাজি বলছেন, “আমরা বাণিজ্যিকভাবে এই পদ্ম ফুলকে কাজে লাগাতে চাইছি। জেলার পদ্ম বিদেশের মাটিতে নজর কাড়লে ব্যবসা বাড়বে আগামী দিনে।” এবছর পদ্মের লন্ডন পাড়িই সেই আশা আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিল।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.