Ultimate magazine theme for WordPress.

মাগুরায় ইসবগুল চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

পরীক্ষামূলক আবাদে সফল

0

মাগুরা প্রতিনিধি : ইসবগুল উৎপাদনে সাফল্য দেখিয়েছে মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র। গতবছর পরীক্ষামূলক উৎপাদনে সাফল্যের পর এবছর ইসবগুল চাষে উৎসাহ দেখাচ্ছেন কৃষকেরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাপকভাবে ইসবগুল চাষ করতে পারলে কৃষক যেমন লাভবান হবেন, তেমনি রফতানি করে বিদেশি মুদ্রাও আসবে।

মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, অতি শীত বা তীব্র গরমে ইসবগুল উৎপাদন সম্ভব নয়। বাংলাদেশের আবহাওয়া ইসবগুল উৎপাদনে দারুণ সহায়ক। সাধারণত নভেম্বর মাসে এ শষ্যের বীজ বপন করা হয়। মার্চ মাসে ফসল ঘরে তোলা হয়। এর উৎপাদন কাল মাত্র ১১০ দিন। এই সময়টায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম থাকায় ফসল নষ্টের ঝুঁকিও কম। প্রতি হেক্টর জমিতে ১০০০ থেকে ১২০০ কেজি পর্যন্ত ইসবগুল উৎপাদিত হয়।

ইউএসএইডে কর্মরত কৃষি গবেষক খায়রুল আবরার বলেন, ‘ইসবগুলের ভূষির বাজারে খুব চাহিদা। একারণেই এর উৎপাদন কৃষকের জন্য খুবই লাভজনক। এক হেক্টর জমিতে ইসবগুল চাষ করে একজন কৃষক কমপক্ষে ৮০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। ধান, পাট বা অন্য যেকোনও রবি ফসল এবং ইসবগুলের ভূষির উৎপাদন মেয়াদ একই। অথচ তা থেকে এত মুনাফা অর্জন সম্ভব নয়। অন্যদিকে রবি ফসলে ভাইরাস বা কীট-পতঙ্গের আক্রমণের যে ঝুঁকি থাকে এখানে তা একেবারেই কম।’

মাগুরার দরিমাগুরা এলাকার কৃষক তৈয়েবুর রহমান বলেন, ‘আমি মসলা গবেষণা কেন্দ্রে ইসবগুলের চাষ দেখে উৎসাহিত হয়েছি। আশা করছি এবছর আমার আড়াই বিঘা জমিতে ইসবগুলের চাষ করবো।’

ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, ‘ইসবগুলের ভূষি আমাদের পরিপাকতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। কৌষ্ঠকাঠিন্যসহ পরিপাকতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ইসবগুলের ভূষি ব্যবহার করা হয়। যেহেতু এটি আয়ুর্বেদিক উপাদান, তাই এর কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।’

কৃষি ও প্রকৃতি বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা পল্লী-প্রকৃতির নির্বাহী পরিচালক শফিকুর রহমান পিন্টু বলেন, ‘মাগুরায় ইসবগুলের চাষ সফল হয়েছে এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। সামনে এর বীজ বপন কাল। আমরা ব্যাপকভাবে এর চাষ করতে পারলে শুধু আমদানি ব্যয় কমানো নয়, বরং রফতানিও সম্ভব। তবে সবার আগে প্রয়োজন কৃষককে এ শষ্য চাষে উদ্বুদ্ধ করা। এজন্য সংশিষ্ট সবাইকে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে।’

মাগুরা আঞ্চলিক মসলা গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক ড. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই ইসবগুল চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছি। বর্তমানে বাংলাদেশে ইসবগুলের ভূষির চাহিদা দুই থেকে আড়াই লাখ মেট্রিক টন। আমরা ব্যাপকভাবে এর উৎপাদন করতে পারলে কমপক্ষে ১৫০০ কোটি টাকার আমদানি ব্যয় সাশ্রয় হবে। ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কৃষক আমাদের কাছে ইসবগুল চাষের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.