Ultimate magazine theme for WordPress.

কীটনাশকমুক্ত নিরাপদ উপায়ে ফসল উৎপাদনে ঝুঁকছে কুষ্টিয়ার কৃষকরা

0

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের পাশাপাশি কুষ্টিয়ার কৃষকরা নিরাপদ উপায়ে ফসল উৎপাদনের দিকে ঝুঁকছে। কীটনাশকের পরিবর্তে তারা প্রাকৃতিক ও যান্ত্রিক উপায়ে ফসলের পোকা-মাকড় দমন করছেন। এতে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকছে, কমছে ফসলের উৎপাদন খরচও। সেই সঙ্গে কৃষকের উৎপাদিত পণ্য হচ্ছে স্বাস্থ্য সম্মত ও নিরাপদ।

পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় কৃষকরা নিচ্ছেন প্রশিক্ষণ। এতে নিরাপদ উপায়ে ফসল উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে ‍কৃষকরা। সমন্বিত বালাই দমন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তারা ফসলের উপকারী পোকা সংরক্ষণ এবং অপকারী পোকার ক্ষতির হার কমিয়ে চাষাবাদ করছে। এজন্য কৃষকদের সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ।

কৃষকদের আরও পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে এবং উদ্বুদ্ধ করতে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পাহাড়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা কৃষি অফিস আয়োজন করে এক মাঠ দিবস অনুষ্ঠানের। অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যমল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. ওবাইদুর রহমান।

অনুষ্ঠানে অতিথিরা কৃষকদের পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। সেই সঙ্গে আইপিএম কৃষক মাঠ স্কুলের ২৫ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে সমাপনী সনদ ও আর্থিক সহায়তা দেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা খামার বাড়ীর পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক সালাউদ্দিন সরদার, মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম জামাল আহম্মেদ, ভাইস-চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জোয়ার্দ্দার, কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ, সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানা প্রমুখ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, আমরা কৃষি অফিসের উদ্যোগে কৃষকদের নিরাপদ ফসল উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করছি। ১৪ সপ্তাহব্যাপী এ প্রশিক্ষণে আমরা পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদনে বিভিন্ন দিক নিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। এছাড়া মাঠ দিবসের মাধ্যমে তাদের উদ্বুদ্ধ করছি।

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যমল কুমার বলেন, বর্তমানে নিরাপদ ফসল ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনকে আমরা চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছি। আমরা কৃষকদের শতভাগ নিরাপদ উপায়ে ফসল উৎপাদনের জন্য নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। জেলাব্যাপী কৃষকরা নিরাপদ ফসল ও খাদ্য উৎপাদনে দিন দিন অগ্রসর হচ্ছে।

আইপিএম কৃষক মাঠ স্কুলের প্রশিক্ষণার্থী অন্তরা ও হোসনে আরা খাতুন বলেন, আমরা এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কিভাবে নিরাপদ শাক-সবজি ও ফসল উৎপাদন কিভাবে করতে হয় তা শিখেছি। আমরা নিজেরা এটা শিখে এলাকার অন্যদের তা শেখাচ্ছি।

আরেক প্রশিক্ষণার্থী কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, জমিতে পোকা দেখা দিলেই আমরা কিটনাশক স্প্রে করতাম। কিন্তু আমরা জানতাম না কোন পোকা উপকারী এবং কোনটা ফসলের ক্ষতিকর। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আমরা উপকারী এবং অপকারী পোকা শনাক্ত এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে তা নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে জানতে পেরেছি।

মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রায় পাঁচ শতাধিক কৃষকদের বালাইনাশক স্প্রে করার সর্তকতা এবং এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সচেতন করতে আইপিএম কৃষক স্কুলের শিক্ষার্থীরা মঞ্চ নাটক পরিবেশন করেন।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.