কৃষিখবর প্রতিবেদক : পতিত, ডুবোচর ও জেগে ওঠা ধুধু বালুচরে কোন বিদ্যুত সংযোগ ছাড়া নদী থেকে পাইপে পলিথিনের চৌবাচ্চায় পানির ধারা তৈরী করা হয়। ১০৫ ফুটের মতো দৈর্ঘ, ১৭-১৮ ফুট প্রস্থ আর ২ থেকে ৪ ফুট গভীরতায় বেড তৈরী করে পলিথিন বিছিয়ে করা যায় মাছ চাষ।
প্রতি বেডে ১০- ১২শ পিচ ছোট পোনা দিয়ে মাত্র সাড়ে ৩ মাস বা ৪ মাসের ব্যবধানে বেডের মাছগুলি ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করা সম্ভব হয়। বালুতে পলিথিন প্রযুক্তি ব্যবহারে তেলাপিয়া, চিংড়ি, পাপদাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বানিজ্যিকভাবে চাষ যেমন লাভজনক আবার কাটাযুক্ত বাদে সব ধরনের মাছই এভাবে চাষ সম্ভব এবং কেজি পর্যন্ত মাছের ওজন হতে পারে। আর মাছ উৎপাদনে দেশ আরোও এগিয়ে যেতে পারে তেমন বাস্তবতা দেখছে এমন চাষের উদ্ভাবক রাকিবুল ইসলাম সাগর ।
বালুচরে কোন খরচ নেই । সরকার যদি দৃষ্টি দেয় তবে এঠা সারাদেশে ছড়িয়ে দিলে লক্ষ লক্ষ বেকার যুবক লাভবান হবে এবং এটা সম্ভব বলে মনে করছে এই মৎস উদ্যোক্তা । তবে স্থানীয় ভাবে জেলা-উপজেলা মৎস অফিসের নেই কোন সহযোগীতা বা পরামর্শ । মৎসকর্মকর্তাদের এমন উদাসীনতায় আগ্রহ হারাতে পারে উদ্যোক্তারা ।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে ছিল না কোন সহযোগীতা । তাই ঝিনাইদহের শৈলকুপার শিক্ষিত বেকার যুবক রাকিবুল ইসলাম সাগর ২০১৭ সালে মাত্র ৫ হাজার টাকা এরপর ২০১৮ সালে একটি বে-সরকারী সংগঠন থেকে মাত্র ১৫শ টাকা ঋন নিয়ে গড়াই নদের কৃঞ্চনগরের বালুচরে মাছ চাষ করেছিল । আর এবার ২০১৯ সালে তৃতীয়বারের মতো শুকনো মৌসুমে সেই বালুচলে তার স্বপের প্রকল্প শুরু করেছেন।
প্রথমবার গড়ায় নদের ভরা মৌসুমের পানি কমার সাথে সাথে নদীতে জেগে ওঠা ধুধু বালুচরে পলিথিনের উপর মাত্র হাটু পানির মিনি চৌবাচ্চায় মাছ চাষ করে প্রথমেই সাড়া জাগিয়েছিল তার সেই প্রকল্প । লাভ হয়েছিল ডবল । আর এবার রীতিমতো সাড়া ফেলেছে প্রত্যন্তপল্লী শৈলকুপার উদ্যোক্তা যুবক রাকিবুল ইসলাম সাগরের সেই প্রকল্প।
এবার ৪টি চৌবাচ্চায় তেলাপিয়া, জাপানিপুটি মাছের পাশাপাশি চিংড়ি চাষের চৌবাচ্চাও তৈরী করে বানিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেছেন । এবার ৪১ হাজার টাকায় খরচে লক্ষটাকার উপরে তার এই মাছ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন মৎস উদ্যোক্তা রাকিবুল ইসলাম সাগর । এই উদ্যোক্তা মনে করছে বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ায় ভরাট হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের পুকুর, আবাস পুকুর ভরাট করতে গিয়ে ধানী জমিতে ঘের করে চলছে মাছ, এতে হ্রাস হচ্ছে জমি চাষ। একটা অভাব মেটাতে গিয়ে আরেকটা অভাবের মখোমুখি হতে হচ্ছে বলে মনে করেন । এসব কারণে পতিত, বালুচরে এমন মাছ চাষ ছড়িয়ে দিতে চান । আর আগামীতে পাবদা, শিং, পুটি, চিংড়ি সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করবেন বলে জানান সাগর ।
নদীর শুকনো চরে এমন মাছ চাষ দেখে স্থানীয়রা বিষ্মিত, প্রচুর পরিমান লাভ এমন মাছ চাষে এমনটি মনে করছে স্থানীয়রা। তারা বলছেন এটা দেশের উপকার, অর্থ আয়েরও উৎস। মরা নদীতে এমন চাষ ছড়ালে অল্প পুজিতে ৩ থেকে ৪মাসের মধ্যে লাভবান হওয়া যায় ।
পুকুর বা জলাশয় লীজ নিয়ে মাছ চাষ ঝুকিপূর্ণ হতে পারে, লস হতে পারে কিন্তু এভাবে কোন ঝুকি নেই। বড় ধরনের পুজি, অর্থ বা জমিরও দরকার লাগে না এভাবে মাছ চাষ করতে। এভাবে জানালেন স্থানীয় নদী পারের মানুষগুলো ।
গড়ায়ের চরে বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা জেগে ওঠা বালুচরে পলিথিনি পুকুরে মাছ চাষ করছে ভাল ফলাফল পাচ্ছেন, এই ধরনের মাছচাষ বৃদ্ধি পেলে আত্মকর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে । গরীব মানুষের আত্মকর্মসংস্থান হচ্ছে বলেও জানান জেলা মৎস কর্মকর্তা আলফাজ উদ্দিন শেখ ।
//এআরএইচ//