কৃষিখবর প্রতিবেদক : সারা দেশে ষষ্ঠবারের মতো কৃষি শুমারির (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) জন্য মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। গতকাল রবিবার থেকে শুরু হয়ে আগামী ২০ জুন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে এই শুমারির তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সারা দেশের শহর ও পল্লি এলাকায় ‘কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৮’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কৃষি শুমারি-২০১৯ পরিচালনা করছে। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে এই শুমারি পরিচালিত হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) জাফর আহাম্মদ খান জানান, কৃষি শুমারি পরিচালনার মাধ্যমে কৃষি খানার সংখ্যা, খানার আকার, ভূমির ব্যবহার, কৃষির প্রকার, শস্যের ধরণ, চাষ পদ্ধতি, গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগীর সংখ্যা, মৎস্য উৎপাদন ও চাষাবাদ সংক্রান্ত তথ্যাদি এবং কৃষি ক্ষেত্রে নিয়োজিত জনবল সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
তিনি জানান, এ তথ্য-উপাত্ত কৃষির উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ এবং অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে বেঞ্চমার্ক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটা দেশব্যাপী বৃহৎ আকারে পরিচালিত একটি পরিসংখ্যানিক কার্যক্রম। প্রতি দশ বছর অন্তর কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। পরিসংখ্যান আইন-২০১৩ অনুযায়ী জনশুমারি এবং অর্থনৈতিক শুমারির পাশাপাশি কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি পরিচালনা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এদেশে ১৯৬০ সালে প্রথমবারের মত নমুনা আকারে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রথম কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩-৮৪, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে কৃষি শুমারি অনুষ্ঠিত হয়। ষষ্ঠবারের মত দেশে কৃষি শুমারি ২০১৯ পরিচালনার উদ্যোগ নেয়া হয়।
এই কৃষি শুমারিতে একজন প্রধান সমন্বয়কারী, একজন জাতীয় সমন্বয়কারী, একজন অতিরিক্ত জাতীয় সমন্বয়কারী, ১০ জন বিভাগীয় সমন্বয়কারী, ৯০ জন জেলা সমন্বয়কারী (ডিসিসি), ৪৯২ জন উপজেলা সমন্বয়কারী (ইউসিসি), ২ হাজার ১২৭ জন জোনাল অফিসার, ২৩ হাজার ১৬৫ জন সুপারভাইজার এবং ১ লাখ ৪৪ হাজার ২১১ জন তথ্য সংগ্রহকারী কাজ করছেন।
কৃষি শুমারি ২০১৯ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পল্লী এলাকায় গড়ে ২৪০টি খানা, পৌরসভা এলাকায় গড়ে ৩০০টি খানা এবং সিটি কর্পোরেশন এলাকায় গড়ে ৩৫০টি খানা নিয়ে একটি গণনা এলাকা গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি গণনা এলাকায় তথ্য সংগ্রহের জন্য স্থানীয়ভাবে শিক্ষিত বেকার যুবক ও যুবমহিলাদের গণনাকারী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
জাফর আহাম্মদ খান আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে ৭ কোটি। বর্তমানে জনসংখ্যা প্রায় ১৬ দশমিক ৭ কোটি। প্রতি বছর জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি জমিতে স্থাপনা নির্মাণ, অকৃষি খাতে জমির ব্যবহার বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে বর্তমানে কৃষি জমি ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। কৃষি খাতে সঠিক নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে ক্রমহ্রাসমান কৃষি জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে কৃষি শুমারি-২০১৯ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলেও দাবি করেন কৃষি শুমারির এই প্রকল্প পরিচালক।
//এআরএইচ//