খুলনা প্রতিনিধি : খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা করে কাজে যোগ দিয়েছেন। তিন শর্তে আজ বুধবার ভোর ৬টা থেকে তারা কাজে যোগ দেন। এর মধ্য দিয়ে টানা ১৬ দিন পর মিলগুলোতে উৎপাদন ফের চালু হলো। মঙ্গলবার খুলনার জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর রাতে শ্রমিক নেতারা আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত নেন।
বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ‘পাটকলগুলোতে যে সব শ্রমিক জরুরি কাজে কর্মরত রয়েছেন তাদের ২২ মে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া দুই সপ্তাহের মজুরি প্রদান এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বকেয়া সব মজুরি প্রদানের শর্তে এক সপ্তাহের এ আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।’
খুলনা জেলা প্রশাসক মো. হেলাল হোসেন বলেন, ‘শ্রমিকদের বকেয়া প্রায় ৬০ কোটি টাকা সরাসরি তাদের ব্যাংক একাউন্টে চলে আসবে।’ প্লাটিনাম জুট মিল সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। অন্য মিলগুলোতে বুধবার ভোর ৬টা থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।
উল্লেখ্য, পাটখাতে প্রয়াজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্র্যাচুইটির অর্থ পরিশাধ, চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহাল, সব মিল সটআপের অনুকূল শ্রমিক-কর্মচারীদের শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ ও স্থায়ীকরণসহ ৯ দফা দাবিতে শ্রমিকরা ১৩ মার্চ থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। গত ৭ এপ্রিল বিজেএমসি থেকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া মজুরি ও বেতন প্রদান এবং ১৮ মে’র মধ্যে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর শ্রমিকরা অবরোধ ও কর্মবিরতি স্থগিত করে কাজে যোগ দেয়। পরে ২৫ এপ্রিলে এসে এক সপ্তাহ সময় নেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
এরপর ২ মে’তেও মজুরি না দেওয়ায় ৫ মে থেকে মিলে উৎপাদন বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন শুরু করে শ্রমিকরা। পাশাপাশি ৬ মে থেকে প্রতিদিন বিকাল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা রাজপথ ও রেলপথ অবরোধ শুরু করে তারা। ঢাকায় শ্রমিক নেতাদের বৈঠকের ঘোষণা অনুযায়ী ১৩ মে থেকে সারাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে এ কর্মসূচি একযোগে শুরু হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার এক বৈঠকে আজ থেকে প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছিল শ্রমিকরা।
//এআরএইচ//