Ultimate magazine theme for WordPress.

শেরপুরের গারো পাহাড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মৌচাষ

0

শেরপুর প্রতিনিধি : জেলার গারো পাহাড় এলাকায় মৌচাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চাষকৃত মধু আহরনের মাধ্যমে অনেক পরিবার স্বচ্ছল জীবন যাপন করতে শুরু করেছেন।
মৌচাষের ফলে পরাগায়নের মাধ্যমে যেমন কৃষিতে ফলন বাড়ছে, তেমনি মধু বিক্রি করে অর্থনৈতিকভাবেও স্বাবলম্বী হচ্ছেন মৌচাষিরা।

সরেজমিন ঘুরে এবং জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানা যায়, বর্তমানে শুধু সরিষার মৌসুমেই নয়, বরং সারাবছরই সীমান্তবর্তি শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকার গজারি বনে বাক্সে মৌমাছি পালন করে মধু চাষ করছেন তিনশতাধিক মৌচাষি।

যারা বৃহৎ পরিসরে মৌচাষ করছেন তাদের একশ থেকে আড়াইশ’ বাক্স রয়েছে। আবার অনেকে পারিবারিকভাবে দু’ থেকে চারটি বাক্সের মাধ্যমে মৌচাষ করছেন।

মূলত, উন্নত জাতের মেলিফেরা ও সিরেনা- এই দু’টি জাতের মৌমাছি দিয়ে এখানকার চাষিরা মধু সংগ্রহ করছেন। একশ’টি বাক্স থেকে বছরে ৪-৫ টন মধু সংগ্রহ করা যায়। খরচ বাদ দিয়ে ৬-৭ লাখ টাকা আয় হচ্ছে।

ঝিনাইগাতীর দুধনই গ্রামের মৌচাষি মো. আব্দুল হালিম জানান, ৩টি বাক্স দিয়ে ওই এলাকার প্রথম মৌচাষী হিসাবে তাঁর যাত্রা শুরু হয়। সাতবছরে এসে এখন তার বাক্সের সংখ্যা দাড়িয়েছে দুইশ’ত।

তিনি জানান, বছরে একশ’টি বাক্সের জন্য খরচ প্রায় দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে তিনি বছরে দশ থেকে এগার লাখ টাকা আয় করেন।

তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে চার প্রজাতির মৌমাছি রয়েছে। এপিস মেলিফেরা, এপিস সিরেনা, এপিস ডটসাটা, এপিস ফ্লোরিয়া। এরমধ্যে এপিস মেলিফেরা ও এপিস সিরেনা জাতের মৌমাছি বাক্সে পালন করে তারা মধু আহরন করছেন।

আব্দুল হালিম বলেন, নভেম্বরের ১৫ থেকে ২০ তারিখ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সরিষার মধু, জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কালিজিরা ও ধনিয়ার মধু, মার্চের শুরু থেকে লিচুর মধু এবং এপ্রিল মাস থেকে গারো পাহাড়ে বনের মধু আহরন করা হয়।

তিনি আরো জানান, ঝিনাইগাতী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় তিনশত মৌচাষি ২-৩টি করে বাক্সে এপিস সিরেনা মৌমাছি চাষের মাধ্যমে মধু উৎপাদন করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করছেন।

বাকাকুড়ার পানবর এলাকা মৌচাষি কানুরাম কোচ জানান, শুরুতে তার ১৬টি বাক্স ছিল। গত পাঁচবছরে একশত বাক্স হয়েছে। গারো পাহাড়ের মধু পাইকারি ১৬ হাজার টাকা মন দরে বিক্রি হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, শেরপুরের উপ-পরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, বিসিক ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা মৌ চাষের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ভ্রাম্যমান মৌচাষিরা সরিষার ফুল ছাড়াও কালিজিরা, লিচু ও বনের ফুল থেকে মধু আহরনে মনোযোগি হচ্ছেন। এতে করে এ এলাকায় মৌচাষ ও মধু আহরন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.