Ultimate magazine theme for WordPress.

পোল্ট্রি খামারে বাড়তি স্ট্যান্ড ফ্যানের পাশাপাশি দরকার ড্রিঙ্কারের পানি ঘন ঘন পরিবর্তন

গরমে পোল্ট্রি খামারীদের করনীয়

0

মাহবুবা আকতার : গত দুই সপ্তাহ যাবত তাপমাত্রা মানুষের সহনশীলতার চরমে অবস্থান করছে। এমন অবস্থায় পোল্ট্রি খামারের বিশেষ যত্ন না নিলে কমে যেতে পারে ব্রয়লারের ওজন বৃদ্ধি এবং লেয়ার খামারের ডিম সংখ্যা। এ অবস্থায় পোল্ট্রি খামারের মোরগ-মুরগি সুস্থ্য রাখতে শেডে মোরগ-মুরগির সংখ্যা কমিয়ে দিতে হবে। অতিরিক্ত স্ট্যান্ড ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া ড্রিঙ্কারের পানি ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হবে। এই তিনটি কাজ না করলে পোল্ট্রি খামারের আয় কমে যাবে। এমনকি মোরগ-মুরগিও হিট স্টোকে আক্রান্ত হতে পারে।

ঘর্মগ্রন্থি না থাকার কারণে মোরগ-মুরগির অতিরিক্ত গরম অসহ্য লাগে। এতে উৎপাদন ক্ষমতা ব্যাহত হয়। অতিরিক্ত তাপে এদের পানি গ্রহণ, শ্বাস-প্রশ্বাস, শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে থাইরয়েড গ্রন্থির আকার, রক্তচাপ, নাড়ির স্পন্দন, রক্তে ক্যালসিয়ামের সমতা, খাদ্য গ্রহণ, শরীরের ওজন ও ডিমের উৎপাদন হ্রাস পায়।

১৫ থেকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এদের উৎপাদন সর্বোচ্চ। ২৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে শতকরা ৪ ভাগ হারে পানি গ্রহণ বৃদ্ধি পায়। ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার পর থেকে ডিমের সংখ্যা না কমলেও প্রতি ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ডিমের ওজন শতকরা এক ভাগ হারে কমে যায়। ২৬.৫ সেলসিয়াস ডিগ্রি তাপমাত্রার পর থেকে মোরগ-মুরগির খাদ্যের রূপান্তর ক্ষমতা হ্রাস পায়।

২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে প্রতি ডিগ্রি তাপ বৃদ্ধিতে ২ থেকে ৪ শতাংশ খাবার গ্রহণ কমে যায়। ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা মোরগ-মুরগির জন্য অসহনীয় এবং ৩৮ ডিগ্রির পর মৃত্যু হার খুব বৃদ্ধি পায়।
তাপজনিত ধকল প্রতিরোধ

খামারের আশেপাশে ছায়াযুক্ত বৃক্ষ রোপণ এবং ঘর পূর্ব-পশ্চিমে হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে আধুনিক খামার ব্যবস্থাপনায় বায়োসিকিউরিটির কথা চিন্তা করে গাছপালা রোপণের প্রতি অনুৎসাহিত করা হয়ে থাকে। গরমে পোল্ট্রি শেডে প্রত্যক্ষ সূর্যালোক পরা যাবে না।

অত্যধিক গরম প্রতিরোধে প্রয়োজনে শেডের ছাদে বা টিনের চালায় দিনে দু’তিন বার পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে। টিনের নিচে চাটাই বা হার্ডবোর্ড দিয়ে সিলিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। অনেক সময় মুরগি যখন হাঁ করে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় তখন ঘরে সেপ্র মেশিন দিয়ে কুয়াশার মত করে পানি ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে।

পানির ড্রিংকার ও ফিডারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। ঘন ঘন ড্রিংকারের পানি পাল্টাতে হবে। গরমে বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ার কারণে শেডের মেঝে অনেক সময় স্যাঁতসেঁতে হয়ে লিটার দ্রুত ভিজে যায়। ফলে রোগের আক্রমণও বাড়ে। সেজন্য প্রতিদিন সকালে ব্রয়লার শেডের লিটার উলোট-পালোট করা প্রয়োজন।

লিটারে গুঁড়ো চুন ব্যবহার করলে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। শেড থেকে শেডের দূরত্ব ৩০ ফুটের বেশি হলে ভালো হয়। শেডে মোরগ-মুরগির ঘনত্ব বেশি হলে তা কমিয়ে দিতে হবে। বাতাসের অবাধ চলাচল শেডের ভেতরের তাপমাত্রা শীতল রাখতে সাহায্য করবে এবং পোল্ট্রির জন্য ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া গ্যাসমুক্ত রাখবে। শেডে স্টেন্ড ফ্যানের ব্যবস্থা করতে হবে।

//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.