Ultimate magazine theme for WordPress.

খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশ : রাষ্ট্রপতি

রাজধানীতে চলছে জাতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা-২০১৯

0

কৃষিখবর প্রতিবেদক : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, খাদ্যশস্য, ফল ও শাক-সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশ। আজ বৃহস্পতিবার ‘জাতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা ২০১৯’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে তিনি একথা বলেন। কৃষি ব্যবস্থা যান্ত্রিকীরণের অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইন্সটিটিশনে ‌’জাতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা-২০১৯’ শুরু হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ মেলায় দেশীয় কৃষির সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করা যাবে।
এবারের মেলায় এসিআই মটর, আলিম ইন্ড্রাস্ট্রিজ, দি মেটাল, চিটাগাং বিল্ডার্স, জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংসহ সরকারি-বেসরকারি অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে। যাতে নতুন নতুন প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শন করা হচ্ছে। দর্শনার্থীদের জন্য মেলা সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, কৃষির উন্নয়ন অভিযাত্রায় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সামগ্রিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে নগরায়ণ ও শিল্পায়নের ফলে কৃষিজমির পরিমাণ দিন দিন কমছে। গ্রাম থেকে মানুষ শহরমুখী হচ্ছে।

তিনি বলেন, কৃষি শ্রমিকের অভাবজনিত সঙ্কট নিরসন এবং ফসল উৎপাদন ও সংগ্রহোত্তর ব্যবস্থাপনায় খরচ কমাতে বিভিন্ন স্তরে লাগসই কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। এ বছরের কৃষি যন্ত্রপাতি মেলার প্রতিপাদ্য ‘যান্ত্রিকীকরণই গড়বে আধুনিক ও লাভজনক কৃষি’ এ প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের চাহিদানুযায়ী উপযোগী কৃষি যন্ত্রপাতি উদ্ভাবন ও ব্যবহারে কৃষি প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

জাতীয় পর্যায়ে কৃষি যন্ত্রপাতি মেলার আয়োজন দেশের কৃষি যান্ত্রিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে আশাবাদ ব্যক্ত করে আবদুল হামিদ বলেন, বর্তমান সরকার কৃষি যন্ত্রপাতি জনপ্রিয়করণের লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে চলেছে। কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে হাওর ও উপকূলীয় এলাকার কৃষকদের ৭০ শতাংশ এবং দেশের অন্যান্য এলাকার জন্য ৫০ শতাংশ উন্নয়ন সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার ও জনপ্রিয়করণের জন্যও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২৫-২৭ এপ্রিল ‘জাতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা ২০১৯’ আয়োজিত হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। কৃষি আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত সময়োচিত পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি।’

তিনি বলেন, আবহমানকাল থেকেই কৃষি উন্নয়নের অন্যতম প্রধান নিয়ামক হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। তাই দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তিনির্ভর টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অত্যধিক। সরকারের বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি ‘জাতীয় কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা ২০১৯’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের ১ম ও ২য় পর্যায়ের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজার ৮৭৩ টি পাওয়ার টিলার, ১ হাজার ২৯৪ ট্রাক্টর, ৭ হাজার ৫৫৮ টি পাওয়ার থ্রেসার, ২ হাজার ১৮০ টি রিপার, ১ হাজার ফুট পাম্প, ৫০০ স্প্রেয়ার, ১ হাজার ৩৩৮ টি সিডার, ৩৭৯ টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার এবং ৭ টি রাইস ট্রান্সপ্লান্টার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় চালু করা হয়েছে কৃষি যন্ত্রপাতি সেবা কেন্দ্র।

এদিকে, বর্তমানে সরকার প্রতিটি উপজেলায় কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ৫০ শতাংশ উন্নয়ন সহয়তা দিচ্ছে। খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্র ক্রয়ে কৃষককে দাম দিতে হচ্ছে অর্ধেক। বাকিটা পরিশোধ করছে সরকার। কেনা যাচ্ছে জেলা বা উপজেলা থেকেই। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় হাওড় ও দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার কৃষক ৭০ শতাংশ ছাড়ে কিনতে পারছে কৃষি যন্ত্র। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে যান্ত্রিকীকরণের মাত্রা বেড়েছে। জনপ্রিয়তা পাচ্ছে নতুন নতুন যন্ত্রপাতিও।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বর্তমানে জমি চাষে ৯০ , সেচে ৮০, মাড়াইয়ে ৭০, কর্তনে ২ ও রোপনে ১ শতাংশ ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। তবে শস্য রোপনে ২০২১ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ পর্যন্ত যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে চায় সরকার। রোপনে বর্তমানে ১ শতাংশ ক্ষেত্রে যন্ত্রের ব্যবহার হলেও ৪১ সালের মধ্যে তা ৮০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। আর ২০২১ সালের মধ্যে কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৪০ শতাংশ যন্ত্রের ব্যবহার নিশ্চিত করতে চায় সরকার, যা ৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রায় ৮০ শতাংশ।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.