নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর সাপাহার উপজেলার জবাই বিলে প্রয়োজনীয় পানি না থাকায় সেচ সংকট পড়েছে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান। পানির অভাবে বিলের দুই পাশের জমির ধান মরে যাচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় সরকারিভাবে বিকল্প পানির ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মনে করছেন কৃষকরা।
কৃষকদের অভিযোগ, জবাই বিলে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা না থাকা এবং বিল এলাকায় কৃষকের বসানো স্যালো টিওবওয়েলগুলোয় মোটর বসানো নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনীহার কারণে এ সমস্যা বর্তমানে প্রকট আকার ধারণ করেছে।
ইরি-বোরো মৌসুমে বোরো ধান ক্ষেতে ভরপুর পানি থাকার কথা। কিন্তু জবাই বিলের ডুমরইল, মাহিল ও কালিন্দা বিলে পর্যাপ্ত পানি তো দূরের কথা, মাঠের পর মাঠ ধানের জমির মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে এবং ধান মরে গেছে। কৃষি নির্ভর এ অঞ্চলের মানুষ বিলের পানি দিয়ে প্রতি বছর ইরি-বোরো মৌসুমে ধান চাষাবাদ করে। এবারে বর্ষা কম হওয়াই সেচ সংকটে পড়েছেন বিলের কৃষকরা।
সোনাডাঙ্গা গ্রামের বোরো চাষি আক্কাজ, সাইদুল ও কুদ্দুস বলেন, প্রায় ২০-২৫ দিন আগে বিলের পানি শুকিয়ে গেছে। বিনা সেচেই তাদের জমির ধান শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। তারা এখন সম্পূর্ণ সৃষ্টিকর্তার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। যদি বৃষ্টি হয় তাহলে মৌসুমের কষ্টের ধান ঘরে তুলতে পারবেন।
তারা আরও জানান, বিল এলাকায় বোরো চাষিদের জন্য সহজ শর্তে বিদ্যুৎ চালিত শ্যালো টিউবওয়েল স্থাপনের অনুমতি দানে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের অনীহার কারণেই প্রতিবছর বিলের বিপুল পরিমাণের বোরো ফসলের ক্ষতি হয়ে থাকে।
দোহারা তারাচাঁন পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম জানান, মূল বিলের গভীর থেকে পানি আনতে হলে সরকারি উদ্যোগে বিলের প্রবাহিত খাড়ি গুলো আরও গভীরভাবে খনন করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার হ্ক্টের জমিতে বোরো ধান চাষা করা হয়েছে। বিল এলাকায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদ হয়েছে। এখন পর্যন্ত অনুমানিক ৫৭৫ হেক্টর জমির ফসল সেচ সংকটে পড়েছে। এরই মধ্যে সরকারি বিল পাড়ের দুই পাশের প্রায় ১০০টি গভীর নলকূপ থেকে স্কিম অর্ন্তভুক্ত জমি বাদেও বিল এলাকার ফেটে যাওয়া জমিগুলোতে দিনরাত সেচ দেওয়া হচ্ছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান হবে।
উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, কৃষক পর্যায়ে ডিজেল চালিত শ্যালো টিউবওয়েল স্থাপনে কোনও বাধা নেই। তাই তার তাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে তা স্থাপন করে সেচ সংকট মোকাবিলা করতে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কল্যাণ চৌধুরী বলেন, জবাই বিলের অতি ঝঁকিপূর্ণ সেচ সংকট এলাকায় ফসল রক্ষায় সাধ্যানুযায়ী বিকল্প সেচ ব্যবস্থায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। বিল এলাকার প্রায় ১০০টি গভীর নলকূপ থেকে দিন রাত নিরলসভাবে বোরো জমিতে সেচ দেওয়া হচ্ছে।
//এআরএইচ//