Ultimate magazine theme for WordPress.

কুষ্টিয়ায় বাড়ছে তুলা চাষ

0

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কম খরচে লাভ বেশি হওয়ায় কুষ্টিয়ায় কৃষকদের মাঝে তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় তুলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়াও আশানুরূপ দাম পাওয়ায় তুলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা।

জেলা তুলা উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুসারে, এ বছর কুষ্টিয়া অঞ্চলের আওতাধীন তিন জেলায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর তুলা চাষ হয়েছে। আর কুষ্টিয়ার মিরপুর, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলায় তুলা চাষ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০ হেক্টর।

মিরপুর উপজেলার তুলা চাষি এজের আলী বলেন, ‘অন্যান্য ফসলের চেয়ে তুলা চাষ লাভজনক। প্রতি বিঘা জমিতে তুলা চাষ করতে খরচ হয় মাত্র ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। সেখানে তুলা উৎপাদন হয় প্রায় ১৪ থেকে ১৫ মণ। প্রতি মণ তুলার মূল্য প্রায় ২৪শ’ টাকা। এ বছর ১ বিঘা জমিতে তুলার চাষ করেছি। আগামীতে আরও বেশি জমিতে তুলা চাষের ইচ্ছা আছে।’

একই উপজেলার নওপাড়া গ্রামের মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ‘এ বছর নিজের দেড় বিঘা জমিতে তুলার চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ হাজার টাকা। গত বছর দেড় বিঘা জমিতে ১৩ মণ তুলা পেয়েছি। আশা করি এবার বেশি পাওয়া যাবে।’

তিনি জানান, ‘তুলা চাষে খরচ কম, পরিশ্রম কম তাই তুলা চাষ করছি। এ ছাড়াও তুলা চাষে প্রাকৃতিক ঝুঁকি কম। একইসঙ্গে উৎপাদিত তুলা বিক্রির জন্য কষ্ট করতে হয় না। উৎপাদিত তুলা সরাসরি তুলা উন্নয়ন বোর্ডই ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা যায়। ফলে অন্যান্য ফসলের তুলনায় তুলা চাষে পরিশ্রম কম হয়।’

মিরপুর উপজেলা কটন ইউনিট কর্মকর্তা আবদুস সাত্তার বলেন, ‘এ বছর তুলার দাম বাড়ায় চাষিরা বেশ খুশি হয়েছেন। এছাড়াও এবার ফলন বেশি হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তুলার বহুবিধ ভাবে ব্যাবহার হয়। একমণ তুলায় ২৮ কেজি তুলা বীজ ও ১২ কেজি ফ্রেশ তুলা থাকে। তুলা বীজ থেকে ভোজ্যতেল ও গ্লিসারিন হিসাবে ব্যবহার হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘চাষিদের মাঝে সময়মতো উন্নতমানের তুলাবীজ সরবরাহ করা, এছাড়া তুলা চাষে আগ্রহ সৃষ্টি করা হয়েছে। যার ফলে গতবারের তুলনায় তুলা চাষ বেড়েছে। চলতি বছর মিরপুর উপজেলায় ১২৬ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এ বছর ১০ হাজার মণ তুলা উৎপাদন হবে।’

জেলা প্রধান তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তা সেন দেবাশীষ বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গতবারের থেকে এবছর তুলার উৎপাদন ভালো হয়েছে। ফলে অর্থকরি ফসল হিসেবে তুলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে এ অঞ্চলের চাষিরা। এছাড়াও তুলার বীজ থেকে ভোজ্যতেল পাওয়ায় চাষিরা বাড়তি লাভবান হচ্ছেন।’

তুলা উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এবছর কুষ্টিয়াসহ এ অঞ্চলের আওতাধীর মেহেরপুরের গাংনী ও রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলায় প্রায় ৪ হাজার হেক্টর তুলার চাষ করা হয়েছে। আর কুষ্টিয়া জেলায় তুলা চাষ হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৫০ হেক্টর। চাষিদের প্রণোদনা বাড়লে তুলা চাষে আগ্রহ আরও বাড়বে। এবছর সরকারী ভাবে ১২ হাজার মেট্রিকটন তুলা ক্রয়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.