কৃষিখবর প্রতিবেদক : পাটের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা, পাট গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং প্রতি বছর পাট থেকে উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনীর আয়োজন করাসহ দশ দফা সুপারিশ হাজির করেছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। আজ শনিবার সকালে রাজধানীতে পবা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘পাটের অর্থনীতি: বিশ্বব্যাংক ও পরিবেশ বিপর্যয়’ শীর্ষক সেমিনারে আয়োজকরা এসব সুপারিশ তুলে ধরেন। পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ড. শফিক উজ জামান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, পরিবেশ বিপর্যয় রোধে পাটের ব্যাপক সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের গ্রামীণ পরিবেশ ও অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারে পাট শিল্প। এজন্য সোনালী ব্যাগসহ পাট শিল্প বিকাশে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
আদমজী জুট মিল যখন বন্ধ করা হয় তখন বিদেশে ১৫ হাজার কোটি টাকার পাট ক্রয়ের চাহিদা ছিল উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, মাত্র এক হাজার ২০০ কোটি টাকা লোকসানের কথা বলে আদজমী বন্ধ করা হয়। ২০০২ সালের ৩০ জুন তৎকালীন সরকার মাত্র পাঁচ দিনের নোটিশে এশিয়ার বৃহত্তম এই পাটকল বন্ধ করে দেয়। গত তিন দশকে শুধু রফতানি খাত নয়, সামগ্রিকভাবে ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প বলতে কেবল তৈরি পোশাককেই বোঝালেও পাট দিয়েই এদেশে রফতানি শুরু হয়েছিল।
দশ দফা সুপারিশগুলো হলো: সরকার ঘোষিত ২১টি জেলায় পাট গুচ্ছ শিল্প (ক্লাস্টার) প্রকল্প অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে দ্রুত বাস্তাবায়ন করা; পাট গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত পণ্যের বাজারজাত করার উদ্যোগ নেওয়া। সেই সঙ্গে বিজ্ঞানীদের প্রণোদনা বৃদ্ধি করা; প্রতি বছর শুধুমাত্র পাট থেকে উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনীর আয়োজন করা; দেশের পলিথিন ও প্লাস্টিক নিষিদ্ধকরণ কার্যক্রম জোরদার করা এবং আইনভঙ্গকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া; ছাত্র-ছাত্রীদের পাটজাত ব্যাগ এবং শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করা; কৃষকের পাটের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা; পাট গবেষণাকেন্দ্র থেকে উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ও পণ্য দ্রুত মাঠপর্যায়ে ব্যবহারের কার্যক্রম গ্রহণ করা; রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পাটকলগুলোকে আধুনিকিকরণের উদ্যোগ নেওয়া; পলিথিনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে প্রচারণা বাড়ানো এবং বিকল্প হিসেবে পাটজাত পণ্যের ব্যবহারে জনগণকে আরও বেশি উৎসাহিত করা এবং ‘পাট মোড়ক আইন-২০১৩’ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া।
//এআরএইচ//