কৃষিখবর প্রতিবেদক : বিপুল সম্ভবনাময় পাট শিল্পে গবেষণা ও পণ্যবহুমুখীকরণের পাশাপাশি ব্র্যান্ডিং বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পাটে লোকসান শুনতে চাই না। আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় পাট দিবস-২০১৯ উদযাপন, পুরস্কার বিতরণী এবং পাটপণ্য মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- এ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম, সচিব মো. মিজানুর রহমান। পরে প্রধানমন্ত্রী পাটপণ্য মেলা ঘুরে দেখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পাট এমন একটি পণ্য যার কিছুই ফেলা যায় না- এটাতে লোকসান কেন হবে? আমরা লোকসান শুনতে চাই না। পাটকে লাভজনক কিভাবে করা যায়, সেটা দেখতে হবে। কৃষি পণ্য হিসেবে পাটজাত পণ্য একটা প্রণোদনা পাবে। আবার এটা যখন শিল্পকারখানায় যাচ্ছে যেহেতু রপ্তানিমুখী পণ্য সেই রপ্তানির অন্যান্য পণ্য যে প্রণোদনা পায় পাটজাত পণ্যও সেই প্রণোদনা পাবে। পাশাপাশি আমার দেশে প্রয়োজনের চাহিদাটা কত দেখতে হবে।
পাট নিয়ে আরও বেশি গবেষণার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাটের ওপর প্রচুর গবেষণা প্রয়োজন, বিশেষ প্রণোদনাও প্রয়োজন। আমরা সেটা করে যাচ্ছি। এই সোনালী আঁশ আমাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
পাট খাতের সম্ভবনার কথা তুলে ধরে এবং করণীয় বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়ে টানা তিনবারসহ চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এত হতাশ হওয়ার কী আছে? লোকসান, লোকসান করবো কেন? আমি হতাশ পার্টির সঙ্গে না, আমি সব সময় আশাবাদী। আমি মনে করি আমাদের দেশের পাটের প্রতিটি জিনিসই কাজে লাগে।
তিনি বলেন, নতুন পাটজাত পণ্য আবিষ্কার করে এটাকে আমরা অবশ্যই লাভজনক করতে পারবো-এটা আমি বিশ্বাস করি। পাটের সোনালী দিন আবার ফিরিয়ে আনতে পারবো বলে মনে করি।
পাটের বহুমুখী ব্যবহারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পাটের কোনো কিছুই ফেলা যায় না। পাটের পাতা, এটা ভালো সবজি। পাট শাকে আয়রণ বেশি, পাট শাক ডায়রিয়া, ডিসেন্ট্রি, জ্বরসহ নানা ধরনের রোগের প্রতিষেধক, আবার পাটের পাতা মাটিতে পড়লে সেখানকার উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। এখন অবশ্য পাটের চা-ও আবিষ্কার হয়েছে। পাটখড়ি’র মূল্য আছে। পাটখড়ি থেকে ফার্নিচার হচ্ছে, জ্বালানিসহ বহুমুখী ব্যবহার হচ্ছে পাটখড়ির।
পাটের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাট আমাদের একটি কৃষি পণ্য। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে পাট আমাদের শিল্পের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। পাট আমাদের রপ্তানি যোগ্য পণ্য। এই পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে এক সময় পাকিস্তান নামক যে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তার সিংহ ভাগ রপ্তানি আয় আসতো এই পাট থেকে।
কৃত্রিম তন্তু পাটের বাজারকে একেবারে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে দিয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, মানুষ এখন পরিবেশ সর্ম্পকে যথেষ্ট সচেতন, যেটি আমাদের সুযোগ করে দিয়েছে পরিবেশবান্ধব পণ্য পাট। এর বিরাট সম্ভাবনা আমাদের সামনে আছে।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাটগাছের ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে বেশি কার্বন শোষণ করে পাট ক্ষেত। এদিক থেকেও পরিবেশ রক্ষায় বিরাট অবদান রাখে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পাটখাতের উন্নয়নে অবদান রাখা সেরা ১৪ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
//এআরএইচ//