বগুড়া প্রতিনিধি : মরিচের জাতের নাম ‘বিজলি প্লাস’। এটি হাইব্রিড জাতের একটি মরিচ। অন্য জাতের মরিচের সঙ্গে এই জাতের মরিচের বেশ খানিকটা পার্থক্য রয়েছে। অন্য সব জাতের মরিচের সঙ্গে একই সময় এই মরিচ চাষ করলেও ফলন আসে আগে। পাওয়া যায় অনেক বাড়তি ফলন। গুণগত মানও বেশ ভাল।
উচ্চ ফলনশীলখ্যাত এই জাতের মরিচ চাষ করেন কৃষক জাহিদুল ইসলাম। চলতি মৌসুমে এই কৃষক ‘বিজলি প্লাস’ জাতের মরিচ লাগান তিন বিঘা জমিতে। অন্য জাতের মরিচের আগেই তার লাগানো গাছে মরিচ চলে আসে। স্বভাবতই আগ থেকেই ক্ষেতের মরিচ উঠানো এবং বিক্রি শুরু করেন।
কৃষক জাহিদুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যেই তিন বিঘা জমি থেকে ১০ বার মরিচ চাষ করেছেন তিনি। প্রতিবার মরিচ হয়েছে ৫০মণ করে। সবমিলে এই পরিমাণ মরিচ তিনি প্রায় ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। বগুড়ার শেরপুর, শাজাহানপুর ও নন্দীগ্রাম উপজেলার কৃষকরা উচ্চ ফলনশীলখ্যাত এই জাতের মরিচ চাষ করে এবার অনেকটা চমক দেখিছেন।
শাজাহানপুর উপজেলার শরীপাড়ার কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, এই জাতের মরিচের রঙ অত্যন্ত সুন্দর। ত্বক চমৎকার মসৃন। সাইজের দিক থেকেও অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ফলনও অনেক ভাল। কারণ তার লাগানো এই জাতের মরিচের ফলন দেখে এলাকার আশপাশের মরিচ চাষিরা অনেকটা চমকে গেছেন’ দাবি এই কৃষকের।
আনিছুর রহমান জানান, ‘বিজলি প্লাস’ জাতের মরিচ আগাম ফলন আসার দিকটা তার সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে। কারণ একই সময়ে লাগানোর পর সবার আগে ক্ষেতের ফসল বাজারে তুলতে পারলে তুলনামূলক দাম ভাল পাওয়া যায়। যেটি এই জাতের মরিচ চাষ করে তিনি পেয়েছেন। ফলে এবার তিনি ‘বিজলি প্লাস’ জাতের মরিচ চাষ করে ফলন ও দাম দু’টোই ভাল পেয়েছেন। এতে অনেক লাভবান হয়েছেন তিনি।
আলমগীর হোসেন নামে আরেক কৃষক জানান, প্রতি একরে প্রায় ৩০-৩৫ মেট্রিক টন হারে উচ্চ ফলনশীল এই জাতের মরিচের গড় ফলন হয়েছে। তিনি মৌসুম ভিত্তিক বিভিন্ন জাতের ফসল চাষ করে থাকেন। কারণ বংশ পরম্পরায় কৃষক পরিবারের মানুষ তিনি। তবে প্রত্যেক মৌসুমে চাষ তালিকায় মরিচ বাধ্যতামূলক। এবার তিনি ‘বিজলি প্লাস’ জাতের মরিচ লাগিয়েছেন। আগাম ফলন ও পাশাপাশি অনেক ভাল দাম পেয়েছেন যোগ করেন কৃষক আলমগীর হোসেন।
মতিলাল সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে ‘বিজলি প্লাস’ জাতের মরিচ চাষ করেছেন তিনি। ফলনও হয়েছে বাম্পার। আগাম ফলন পাওয়ায় দামও পেয়েছেন বেশ ভাল। আগামীতেও তিনি এই জাতের মরিচ চাষ করবেন বলেও মত দেন। একই মত দেন কৃষক হারেজ উদ্দিন ও জিল্লুর রহমান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলার শেরপুর, শাজাহানপুর ও নন্দীগ্রাম উপজেলার ২৫০জন কৃষক এবারই প্রথম এই জাতের মরিচ চাষ করেন।
সংশ্লিষ্ট উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আবু তাহের, মোছা. মাকসুদা বানু, সুজন কুমার, মোছা মাহমুদা আক্তার জানান, হাইব্রিড ‘বিজলি প্লাস’ জাতের মরিচ চাষ করে কৃষকরা অনেকটা লাভবান হয়েছেন। এই জাতের মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া আগাম ফলন হওয়ায় কৃষকরা ভাল দামও পেয়েছেন যোগ করেন যোগ করেন এসব কৃষি কর্মকর্তারা।