কৃষিখবর প্রতিবেদক : ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জাত উন্নয়নে গবেষণা চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট। দেশীয় জাতের এ ছাগলের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন সহজ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ৪৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, প্রজননে উর্বর এ জাতের ছাগল প্রতিবার দুই থেকে তিনটি করে বছরে দু’বার বাচ্চা দেয়। অন্যদিকে দেশে ছাগল ও ভেড়া পালনকারীর ৭০ শতাংশ হচ্ছে ভূমিহীন, প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক। ছাগলের উৎপাদন বাড়ানো গেলে সমাজের অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। এতে দারিদ্র্যের হার কমে যাবে। এ কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় দেশের ছয়টি জেলায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে। জেলাগুলো হলো- ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, বান্দরবান, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা। আগামী পাঁচ বছরে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এরই মধ্যে প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি প্রকল্প প্রস্তাবের ওপর মূল্যায়ন (পিইসি) কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পিইসি সভায় প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় (একনেক) উপস্থাপন করা হবে বলে জানান পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, সম্ভাবনাময় জেনেটিক সম্পদ হিসেবে দেশের গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশের ছাগল মূলত মাংস ও চামড়ার জন্য বিখ্যাত। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ক্ষুদ্র খামারিদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। দেশের মোট ছাগলের ৯০ শতাংশ হচ্ছে ব্ল্যাক বেঙ্গল। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালনে সহজ প্রযুক্তিগুলো মাঠ পর্যায়ে হস্তান্তর করা হবে। এতে দেশীয় ছাগল সংরক্ষণ সহায়ক হবে এবং সংখ্যা বাড়বে। এর মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং নারী ও শিশুদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের ওপর ভিত্তি করে মাথাপিছু সরবরাহ নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়েছে; কিন্তু প্রাণিজ আমিষ উৎপাদন এখনও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। গুণগতমানসম্পন্ন আমিষের প্রধান উৎস হলো গবাদিপশু। আমিষের অভাব মানুষের শারীরিক ও মানসিক মেধা বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। ছাগলের দুধ ও মাংসের মাধ্যমে গুণগতমানসম্পন্ন আমিষ পাওয়া সম্ভব। এ কারণে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
//এআরএইচ//