Ultimate magazine theme for WordPress.

সময়ে শোধ করলে কৃষিঋণের সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত

0

কৃষিখবর ডেস্ক : সময় মতো পরিশোধ করলে কৃষিঋনের সুদ মওকুফ করার চিন্তা করছে ভারত সরকার। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জরুরি বৈঠকে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি সরকার। খবর পিটিআই।

খবরে বলা হয়েছে, আগামী লোকসভা ভোটে মূল ইস্যু হতে চলেছে কৃষিই। আর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি কৃষকরা যে বিমুখ তার স্পষ্ট প্রমাণ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড় বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়। তাই ‘স্মার্ট সিটি, ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ ছেড়ে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহকে পুরনো কর্মসূচির রাস্তাতেই ফিরতে হচ্ছে। আর তাঁদের প্রধান টার্গেট যে কৃষক সম্প্রদায়, তা পরিষ্কার গত বুধবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে শীর্ষ কর্তাদের জরুরি বৈঠকে। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিং এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।

বৈঠকে কৃষিঋণ মকুবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। কিন্তু কৃষকদের মন ফিরে পেতে মোদি-শাহরা যে মরিয়া, তার কিছুটা ইঙ্গিত মিলেছে এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সাংবাদিক বৈঠকে। সেখানে একাধিক প্রসঙ্গের মধ্যে তাঁর কথায় বারবার ঘুরেফিরে এসেছে কৃষক ইস্যু। কিন্তু সরকারের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেননি তিনি। শুধু বলেছেন, ‘কৃষকদের উন্নতিতে আমাদের সরকার দায়বদ্ধ। এই বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বা হবে, শীঘ্রই তা প্রকাশ্যে আসবে।’
কিন্তু কী সেই সিদ্ধান্ত?

সূত্রের খবর, সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করে দিলে সুদে ছাড় দেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমানে এই সুদের হার ৪ শতাংশ। সুদ মকুব করে দিলে কোষাগার থেকে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কোটি টাকা বেরিয়ে যাবে। কিন্তু তিন রাজ্যে নির্বাচনী পরাজয় এবং রাহুল গান্ধীর ক্রমাগত আক্রমণে লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে সেই সিদ্ধান্তই হয়তো নেবে মোদি সরকার।

বর্তমানে স্বল্পমেয়াদি ভিত্তিতে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারেন কৃষকরা। এর জন্য সুদ দিতে হয় ৯ শতাংশ। তার ২ শতাংশ সুদ দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৪ শতাংশ সুদ দিতে হয় সেইসব কৃষককে, যাঁরা সময়ে ঋণ শোধ করে দেন। সময় পেরিয়ে গেলে ৭ শতাংশ হারেই সুদ সহ ঋণ শোধ করতে হয় চাষিদের। কৃষক ইস্যুতে রাহুল গান্ধীর ক্রমাগত প্রচারে কোণঠাসা কেন্দ্র তাই পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফলের পর থেকেই একাধিকবার বৈঠকে বসেছে।

কৃষকদের ছাড় দিয়ে কীভাবে তাদের মন জয় করা যায়, তা যেমন প্রধান লক্ষ্য ছিল, তেমনই কোষাগারেও যাতে চাপ না পড়ে, সেদিকেও নজর ছিল মোদি সরকারের। তাই যে সব কৃষক সময়ে ঋণ শোধ করে দেবেন, তাঁদের সুদ মকুব করার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ভাবনাচিন্তা করা হয়েছে। একইসঙ্গে আলোচনা চলছে খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে বিমার প্রিমিয়াম সম্পূর্ণ মকুব করে দেওয়ার বিষয়েও।

বর্তমানে কৃষকরা খরিফ এবং রবি শস্যের বিমার প্রিমিয়াম বাবদ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা দেন। তাই এই টাকা মকুব করা হলে উপকৃতই হবেন কৃষক সম্প্রদায়। একইসঙ্গে পরিকল্পনা চলছে উদ্যানপালনের ক্ষেত্রে বিমার টাকা কমিয়ে যাতে কৃষকদের স্বস্তি দেওয়া যায়। কারণ, ‘মোদি সরকার কৃষকদরদী নয়’, রাহুলের এই প্রচারে তিন রাজ্যে বেকায়দায় পড়েছে বিজেপি। তাই ভোটযন্ত্রের স্বার্থেই হয়তো কোষাগারের সঙ্গে আপস করতে চলেছে মোদি সরকার।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.