কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় চলতি বছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠ জুড়ে এখন ধান কাটা, মাড়াই ও শুকিয়ে ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকরা। তবে দাম কম থাকায় হতাশায় পড়েছেন চাষিরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়ায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮৪ হাজার ৬৪৬ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৮৪ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে আমান ধানের চাষ হয়েছে। এদিকে, আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল দুই লাখ ৩৬ হাজার ১৩৮ মেট্রিকটন। সেখানে উৎপাদন হয়েছে দুই লাখ ১৭ হাজার ৪৯৯ মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত ৭৮ভাগ আমন ধান কাটা হয়েছে। তবে মৌসুম শেষে আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের আশা করছেন কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ জানায়, কুষ্টিয়ায় এ বছর আমন মৌসুমে সদর উপজেলায় ২০ হাজার ৩১০ হেক্টর, খোকসা উপজেলায় ছয় হাজার ৭৫ হেক্টর, কুমারখালী উপজেলায় ১২ হাজার ৬৩০ হেক্টর, মিরপুর উপজেলায় ২১ হাজার ৭০৫ হেক্টর, ভেড়ামারা উপজেলায় ৫হাজার ৮৮০ হেক্টর এবং দৌলতপুর উপজেলায় ১৮হাজার ৫০ হেক্টর আমান ধানের চাষ করা হয়েছে।
এদিকে কুষ্টিয়ায় আমন চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। বড়বাজার সরকারী খাদ্য গুদামে সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন। এবার ৩৬ টাকা দরে কুষ্টিয়ার মিলারদের কাছ থেকে প্রায় ১৮ হাজার মেট্রিক টন আমন চাল কেনা হবে। এ জন্য প্রায় ৫ শতাধিক মিলারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সরকার।
মিরপুর গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম জানান, ‘এ বছর ৫বিঘা জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে প্রায় ৬হাজার টাকা। বিঘা প্রতি ধান পেয়েছি ১২ থেকে ১৫মণ। এ ছাড়াও শ্রমিক দিয়ে ধান কাটা এবং মাড়াই খরচ হয়েছে অনেক টাকা। তবে সে তুলনায় বাজারে ধানের দাম একবারে কম।’
তিনি আরও জানান, ‘বর্তমানে বাজারে ৫ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকায় প্রতিমণ ধান বিক্রি হচ্ছে। ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় চাষিরা হতাশ। ’
উপজেলা ধুবইল গ্রামের চাষি সুজন আলী জানান, ‘ধান চাষের খরচ বেড়েছে। তবে সে তুলনায় বাড়ছে না কৃষকদের উৎপাদিত ধানের দাম। এভাবে চলতে থাকলে ধান চাষে আগ্রহ হারাবে কৃষক।’
কুষ্টিয়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, এবছর আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ৭৮ ভাগ আমন ধান কাটা হয়ে গেছে। এ বছরও আমন ধান চাষে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, আবাদ তদারকিও করা হয়েছে। তাই ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তাছাড়াও কৃষকরা এখন অনেক সচেতন। তাই দুর্যোগ বা রোগ-বালাই থেকে ফসল রক্ষা করতে তারা জানেন।
//এআরএইচ//