কৃষিখবর প্রতিবেদক : কৃষিখাতে ব্যাংকগুলোর ঋণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খেলাপিও বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর মাসেও বেড়েছে কৃষিখাতে খেলাপি ঋণ। এবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কৃষিখাতে মন্দ বা খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। সূত্র দৈনিক ইত্তেফাক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত কৃষিঋণ বিতরণের স্থিতি ৩৯ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ১৩.৭০ শতাংশ। আলোচ্য সময় পর্যন্ত সরকারি ব্যাংকগুলোর ২৯ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে খেলাপি রয়েছে ৫ হাজার ১১৮ কোটি টাকা, যা কৃষিখাতে মোট খেলাপি ঋণের প্রায় ৯৫ শতাংশ। এটা ব্যাংকগুলোর কৃষি ঋণ স্থিতির ১৮ দশমিক ২৩ শতাংশ।
বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর মোট ৯ হাজার ৫৪১ কোটি টাকার কৃষি ঋণের বিপরীতে খেলাপি হয়েছে ২৭৭ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কৃষিঋণ খেলাপি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি মোটেই ইতিবাচক নয়। বাম্পার ফলনের পরেও দেশে আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে ঋণ নিয়ে সময়মতো পরিশোধ করতে পারছেন না তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, কৃষিঋণে খেলাপির শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। ব্যাংকটির ২ হাজার ১১৯ কোটি টাকা এখন খেলাপি। এছাড়া সোনালী ব্যাংকে ১ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ৮৭৬ কোটি, জনতা ব্যাংকে ২৭৬ কোটি এবং অগ্রণী ব্যাংকের ২০৭ কোটি টাকার কৃষি ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে খেলাপি ঋণের শীর্ষে রয়েছে উত্তরা ব্যাংক। এ ব্যাংকের প্রায় ৩০ কোটি টাকা খেলাপি হয়েছে। এছাড়া এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ১২ কোটি, ন্যাশনালের ৬ কোটি ৩২ লাখ, ঢাকা ব্যাংকের ৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের আড়াই শতাংশ ঋণ পল্লী অঞ্চলে বিতরণ করতে হবে। পল্লী অঞ্চলে অর্থ সরবরাহের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা ও খাদ্য নিরাপত্তা সৃষ্টিতে সরকারের লক্ষ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক এ নির্দেশনা জারি করে। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক এ ব্যবস্থা চালু করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে, আলোচ্য সময়ে ৬টি ব্যাংক এ অর্থবছরে কৃষিখাতে কোনো ঋণ বিতরণ করেনি। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশি ব্যাংক কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এবং ওরি ব্যাংক। এ ছাড়া মধুমতি এবং সীমান্ত ব্যাংক কোনো ঋণ বিতরণ করেনি।
//এআরএইচ//