Ultimate magazine theme for WordPress.

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহারে গুরুত্ব পাচ্ছে কৃষি

0


আতিকুর রহমান : আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহার তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী সপ্তাহে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করবে। আর রাজনৈতিক দলগুলোর এবারের ইশতেহারে কৃষিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি গবেষণা এবং ফসলের বহুমুখীকরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান কর্মকাণ্ড এবং জীবনীশক্তি। দেশের সবচেয়ে বড় উৎপাদনশীল ব্যক্তিখাত হিসেবে কৃষিখাত জিডিপিতে শতকরা প্রায় ১৪.৭৫ ভাগ অবদান রাখে। কৃষির বিকাশের মাধ্যমেই শিল্প ও সেবাখাত বিকশিত হচ্ছে। কৃষি সামাজিক কর্মকাণ্ডের এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্ত:সম্পর্কিত ক্ষেত্র যা জনগণের খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তা, কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র হ্রাসকরণের মত বিষয়াদির সাথে সংশ্লিষ্ট। সাংবিধানিকভাবেও জনগণের খাদ্য অধিকার অর্জন এবং পুষ্টিমান উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্থায়ীত্বশীল কৃষি ও কৃষিকেন্দ্রিক শিল্পই বাংলাদেশের মত গ্রাম-কৃষিনির্ভর দেশের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে সবচেয়ে জোরালো ভূমিকা রাখতে পারে। তাই আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে কৃষি ও খাদ্য অধিকারকে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করছে।

বর্তমানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নকে প্রধান বিবেচ্য ধরা হয়েছে। পুষ্টিসম্মত খাদ্য, দুর্নীতি দমন, জনবান্ধব পুলিশ ও প্রশাসন তৈরি, যুব সমাজকে উন্নয়নের সাথে সম্পৃক্ত করা, সামষ্ঠিক অর্থনীতি, সামাজিক নিরাপত্তা, কর্মসংস্থানের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের ইশতেহার। আর এসব বাস্তবায়ন করতে গ্রামীন অর্থনীতির চালিকাশক্তি কৃষিকে প্রধান গুরুত্ব দিয়েছে দলটি। এছাড়া খাদ্যের মান বাড়ানো ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য নিশ্চিত করাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

এবারের ইশতেহারে কোন বিষয়গুলোকে প্রধান্য দেওয়া হচ্ছে জানতে চাওয়া হলে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, অনেক বিষয়ই ইশতেহারে আসবে। খাদ্য নিরাপত্তা, যেমন মানুষের ক্ষুধা নেই কিন্তু পুষ্ঠি সমৃদ্ধ ও মান সম্পন্ন খাদ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দেশে শিক্ষার অনেক প্রসার হয়েছে। আমাদের সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। মানুষ গড়ার জন্য শিক্ষাকে মানসম্মত ও আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার প্রয়োজন। এ বিষয়গুলোকে ইশতেহারে প্রধান্য দেওয়া হবে। আমাদের দলের ঘোষণাপত্রে যে বিষয়গুলো রয়েছে তার আলোকেই ইশতেহার তৈরি হবে।

এদিকে ইশতেহার তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর গত প্রায় ১০ বছরে সরকারের ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যেই দেশ খাদ্যে স্বংয়সম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। এখন জরুরি কাজ হচ্ছে পুষ্টি নিশ্চিত করা। পুষ্টির যোগান বাড়ানো।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রাথমিক খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। ‘জনগণ এ রাষ্ট্রের মালিক’- এ ধারণা সুপ্রতিষ্ঠিত করার নির্দেশনা সংবলিত ইশতেহারে সব মত ও পথ নিয়ে বাংলাদেশকে একটি রেইনবো ন্যাশন বা রংধনু জাতিতে পরিণত করার বিস্তারিত ঘোষণা থাকবে। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপরও।

ইশতেহারে সাংবিধানিক সংস্কার, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, বেকারত্ব কমানো, উন্নয়নের সুষম বণ্টন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত, জাতীয় নেতাদের মর্যাদা নিশ্চিত, মেগা প্রকল্পগুলো অব্যাহত রাখা, নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি, কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন, কোটা সংস্কার, সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত, স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের সরকারি চিকিত্সা সুবিধা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি থাকবে।

সূত্র জানায়, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ব্যক্তিগতভাবে কৃষক ও কৃষিস্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে পাঁচটি প্রস্তাব তৈরি করে খসড়া ইশতেহারে যুক্ত করার জন্য দিয়েছেন। এগুলো হলো-স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, বেকারত্ব নিরসন, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার, কৃষিতে ভর্তুকি, দ্রব্যমূল্য ও শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের জন্য আমাদের ইশতেহারের একটা খসড়া করা হয়েছে। শিগগিরই এটা চূড়ান্ত করা হবে।

জাতীয় পার্টি একাদশ সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৮টি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তাদের নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করছে। জনকল্যাণ ও প্রযুক্তিনির্ভর পরিবর্তনের অঙ্গীকার ইশতেহারে প্রাধান্য পাবে। এর মধ্যে রয়েছে- কৃষি উপকরণের ওপর কর-শুল্ক মওকুফ, সহজ শর্তে কৃষকদের ঋণ সরবরাহকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
//এআরএইচ/

Leave A Reply

Your email address will not be published.