Ultimate magazine theme for WordPress.

গবাদি পশু ছাড়া গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতির কথা ভাবা যায় না : নরেন্দ্র মোদি

রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশন উদ্বোধন

0

কৃষিখবর ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, গবাদি পশুর উন্নয়ন ছাড়া গ্রামীন অর্থনীতির উন্নতির কথা ভাবা যায় না। অথচ  গরু বা ওম শব্দ শুনলেই কিছু মানুষের চুল খাড়া হয়ে যায়। তাঁরা মনে করেন, দেশ বোধহয় ষোড়শ শতকে ফিরে গেল। এটা দুর্ভাগ্যজনক। খবর আনন্দবাজার।

আজ বুধবার মথুরায় ন্যাশনাল অ্যানিম্যাল ডিজিস কন্ট্রোল প্রোগ্রাম ফর এফএমডি অ্যান্ড ব্রুসেলোসিস’ শীর্ষক সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১২ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে। ২০২৪ সাল পর্যন্ত নিখরচায় ৫০ কোটি গবাদি পশুর টিকাকরণ করা হবে। পশুদের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দিতেই এই প্রকল্প শুরু করা হয়েছে।

প্রথম দফায় ক্ষমতায় এসে দেশীয় গরু প্রজনন বাড়াতে ‘রাষ্ট্রীয় গোকুল মিশনে’র ওপর জোর দিয়েছিল মোদি সরকার। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে গরুর সুস্থ জীবনের লক্ষ্যে জাতীয় কমর্সূচিকে ঢেলে সাজার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপি সরকার। পোলিও নির্মূলকরণের মতোই গবাদি পশুর রোগ নিরাময়ই কেন্দ্রের লক্ষ্য। ‘ন্যাশনাল অ্যানিম্যাল ডিজিস কন্ট্রোল প্রোগ্রাম ফর এফএমডি অ্যান্ড ব্রুসেলোসিস’ নামে ওই প্রকল্প পুরোদমে শুরু করতে আজ বুধবার উত্তরপ্রদেশের মথুরা থেকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

ধুঁকছে জিডিপি। দেশের আর্থিক বৃদ্ধির গতি নিম্নগামী। উৎপাদন শিল্প, কৃষি-সহ নানা ক্ষেত্রে দেশের অর্থনীতির হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন অর্থনীতিবিদরা। এই টানাপড়েনের মধ্যে সরাসরি তা নিয়ে কথা না বলে, গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে ভিন্ন বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

তিনি বলেন, ‘ভারতীয় অর্থনীতির দিক থেকে পরিবেশ ও প্রাণিকুল সব সময়েই গুরুত্বপূর্ণ। কেবল প্রকৃতি ও অর্থনৈতিক উন্নতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে পারলেই আমরা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারি।’

এফএমডি অর্থাৎ ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ এবং ‘ব্রুসেলোসিস’ নামে গরুর বিশেষ রোগ রোখার পাশাপাশি ভেড়া, ছাগল, মোষ, শূকরের সুস্বাস্থ্যের লক্ষ্যে আগামী পাঁচ বছরে ১৩ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা খরচ করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। যার মধ্যে স্রেফ গরু, ছাগলের মতো গবাদি পশুর ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ রোগ আটকাতেই আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১২ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা খরচ করা হবে বলেই প্রাণিসম্পদ বিকাশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে। আগে এই প্রকল্পের খরচের ক্ষেত্রে রাজ্যকে দিতে হতো ৪০ শতাংশ। কিন্তু এখন প্রকল্প নতুন করে ঢেলে সাজায় কেন্দ্রই পুরো খরচ বহন করবে।

আগামী ছ’ বছরের মধ্যে রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং ২০৩০ সালের মধ্যে গবাদি পশুর এই বিশেষ রোগ নির্মূল করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে মোদি সরকার। ‘ফুট অ্যান্ড মাউথ’ রোগ নির্মূল করতে পারলে প্রায় ৩০ শতাংশ দুধ নষ্ট হওয়া আটকানো যাবে। একইসঙ্গে নিরোগ গোরুর রপ্তানি বাড়বে। রোগ নিয়ন্ত্রণে আনতে বছরে দু’বার করে গোরু এবং মোষকে টিকা দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ২০০৩-০৪ আর্থিক বছরে গবাদি পশুর এই রোগ নিরাময় প্রকল্প শুরু হলেও তা আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি বলেই প্রধানমন্ত্রীর অফিসের রিপোর্ট। তাই নতুন করে ঢেলে সাজিয়েই ১০০ শতাংশ কেন্দ্রের খরচে প্রকল্প শুরু করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকদের পেনশন দেওয়ার প্রকল্পও ১২ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পে সরকার আগামী তিন বছরের জন্য ১০ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করছে। দেশের পাঁচ কোটি উল্লেখিত কৃষকের ৬০ বছরের বয়সের পর থেকে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকা পেনশন দেওয়া হবে। টার্গেট পাঁচ কোটি কৃষক হলেও, এই মূহূর্তে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষর নাম নথিভূক্ত হয়েছে বলে কৃষিমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে। এবং সেই তালিকা সামনে রেখেই আগামী আগামী বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে ‘কিষাণ মান-ধন যোজনা’র সূচনা করবেন মোদি।

সামনেই ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা নির্বাচন। তাই গরিব কৃষকের এই পেনশন প্রকল্প শুরুর সূচনা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঝাড়খণ্ডকে বেছে নিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, ৬০ বছর বয়সের পর কোনও মাসে তিন হাজার টাকার এই পেনশন পেতে হলে ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষককেও অর্থ কনট্রিবিউট করতে হবে। এখন যাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, কেবলমাত্র সেইসব ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক কৃষকই ‘কিষাণ মান-ধন’ যোজনায় নাম নথিভূক্ত করতে পারবেন।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.