Ultimate magazine theme for WordPress.

জেনে নিন ‘হাড়জোড়া’ গাছের উপকারিতা

0

কৃষিখবর ডেস্ক : গাছ দেশের চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা ও সুন্দরবনে সহজলভ্য। উষ্ণমণ্ডলীয় আফ্রিকা, আরব, মাদাগাস্কার, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও জাভা এই গাছের আদি ভূমি। ভাল জন্মে বৃষ্টিবহুল অঞ্চলের ঝোপ-জঙ্গলে। লতানো এই গাছটি পাঁচিল বা বেড়ার শোভা বর্ধনের জন্য লাগানো হয়। এটি Vitales বর্গ ও Vitaceae পরিবারভুক্ত C. quadrangularis প্রজাতি উদ্ভিদ। স্থানিয় নাম: হাড়ভাঙা লতা বা হারেঙ্গা নামেও পরিচিত।
ইংরেজী নাম: Veldt Grape or Devil’s Backbone

বংশবিস্তার: বীজ থেকে চারা উৎপাদন সম্বব হলেও পর্বসন্ধিসহ লতার অংশবিশেষ মাটিতে লাগালে সহজেই নতুন গাছ জন্মে। এ জন্য হাড়জোড়ার অন্য এক নাম কাগুবল্লী।

পরিচিতি: এটি বৃহৎ শাখান্বিত বীরুৎ-সদৃশ আরোহী। সরল ও সরু পত্র-পতিমুখ আঁকশিযুক্ত। কাণ্ড রসাল, চার কোনাকার এবং চার পর্বযুক্ত। পত্র সরল, তিন থেকে ছয় সেন্টিমিটার লম্বা, নরম ও রসাল। পত্রবৃন্ত দেড় সেন্টিমিটার লম্বা, উপপত্র জোড়বদ্ধ, প্রশস্ত ডিম্বাকার, সবুজ ও ক্ষণস্থায়ী। মঞ্জরিদণ্ড আড়াই সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। ফুল চার অংশক, আড়াআড়িভাবে পাঁচ মিলিমিটার ও লালচে রঙের। বৃতি পেয়ালাকার, দল খণ্ডক চারটি, প্রায় দুই মিলিমিটার লম্বা। পুংকেশর চারটি। প্রস্ফুটনকাল সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। ফল গোলাকার, পাকলে লাল ও একবীজী।

ঔষধী গুনা গুন: হাড়জোড়া লতা স্কার্ভি, নাক, কান ও হাড়ভাঙা চিকিৎসায় বিশেষভাবে ব্যবহার্য। গাছের কচি কাণ্ড সবজি হিসেবে খাওয়া হয়।

১। হাড়জোড়া বা অস্থিসংহার হাড়ভাঙায় অত্যন্ত কার্যকর। এর ডাঁটা ও পাতা সমপরিমাণ রসুন ও গুণগুলু একসাথে বেটে একটু গরম করে ভাঙা স্থানে প্রলেপ দিলে জুড়ে যাবে। প্রলেপটি ২/১ দিন পরপর পরিবর্তন করে লাগাতে হবে।
২। হাড়জোড়ায় oxo steroid নামক একটি রাসায়নিক যৌগ রয়েছে যা ভাঙা হাড় জোড়া লাগতে সাহায্য করে। IJP, 1962; IJMR, 1976; সে কারণে হাড়ভাঙার ফোলা ও ব্যথা সারাতে সমপরিমাণ হাড়জোড়ার ডাঁটা, গন্ধবদলি ও নিশিন্দা পাতার সাথে অর্ধেক পরিমাণ ধূতরার পাতা একসাথে বেটে গরম করে প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফোলা দুইই চলে যায়।
৩। অনিয়মিত ঋতুস্রাবে অর্থাৎ মাসের দিনগুলি এগিয়ে পিছিয়ে গেলে কচি হাড়জোড়ার ডাঁটা কুচি কুচি করে কেটে শুকিয়ে সেই গুঁড়া ২ টিপ পানিসহ দিনে ২ বার কিছুদিন খেলে ওটা স্বাভাবিক হবে।
৪। উপর্যুক্ত গুঁড়া সকাল-বিকাল ২বার খেলে শ্বাস রোগেরও উপশম হয়।
৫। কৃমির উপদ্রব হলে উপর্যুক্ত হাড়জোড়া চূর্ণ ঘিয়ে ভেজে পানিসহ ২/৩ টিপ দিনে ২ বার খেলে এ অসুবিধা চলে যাবে।
৬। কানের প্রদাহে ডাঁটার রস উপকারী (Ghani, 2003); কানে পুঁজ হলে ৫০ গ্রাম সরিষার তেলে ২৫ গ্রাম হাড়জোড়া ডাঁটা চাকা চাকা করে কেটে আলু ভাজার মতো ভেজে ঐ তেলের ২/১ ফোঁটা করে কানে দিলে ওটা সেরে যাবে।
৭। হাড়জোড়ার লতা ও পাতার অ্যালকোহলীয় নির্যাস উচ্চ রক্তচাপ রোধক ও মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে।
৮। কচি ডাঁটার ভস্ম বদহজম, পেট ফাঁপা ও অন্যান্য পেটের পীড়ায় ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়। (Ghani, 2003)
৯। কোনো কারণে নাক দিয়ে রক্ত পড়লে এ ডাঁটার রস নাকে ব্যবহার করলে রক্ত পড়া বন্ধ হবে।
//এআরএইচ//

Leave A Reply

Your email address will not be published.